সিলেট-আখাউড়া রেলপথের গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন কুলাউড়া জংশন স্টেশনটির বেহাল দশা বিরাজ করছে। নানামুখী সমস্যার দরুন প্রতিনিয়ত স্টেশনে আসা যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছে। স্টেশনের প্রবেশমুখে থাকা বড় দু’টি গর্তে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। বাথরুমের পাইপ ফেটে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি পড়ছে বাহিরে। ট্রেনের সিডিউল বোর্ডে অসঙ্গতি। ট্রেনের সময় ও বন্ধের দিন পরিবর্তন হলেও বিলবোর্ড পরিবর্তন হয়নি। বিশ্রামাঘার সবসময় থাকে তালাবদ্ধ। এ ছাড়াও জংশনে কোয়ার্টারগুলো অবৈধভাবে ভাড়া দিয়ে চলছে বাণিজ্য। যেন এসব দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন কুলাউড়া জংশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের প্রবেশমুখে বাথরুমের ট্রাংকির ফাটা পাইপ দিয়ে ময়লা ও পানি স্টেশনের রাস্তা পর্যন্ত গড়িয়ে পড়ায় যাত্রীদের জুতা ও কাপড়-চোপড় অপবিত্র হচ্ছে। এ ছাড়াও ট্রেনের সিডিউল পরিবর্তন হলেও স্টেশনে টাঙানো দু’টি বিলবোর্ডে পরিবর্তন করা হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার স্টেশনে পাহাড়ীকা ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী একজন কলেজের প্রভাষকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত সোমবার পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনি সিলেট যাওয়ার জন্য এসে দেখেন ট্রেন সোমবারে বন্ধ। অথচ বিলবোর্ডে লিখা পারাবত মঙ্গলবারে বন্ধ। তা ছাড়া ট্রেনের আসার সময়ের পূর্বে বিশ্রামার খোলার নিয়ম থাকলেও কুলাউড়া স্টেশনের বিশ্রামার সবসময় তালা মেরে রাখা হয়।
এদিকে সম্প্রতি মো: আব্দুল মালিক নামে রেলওয়ে কোয়ার্টারে বসবাসরত এক ব্যক্তি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করে বলেছেন, কুলাউড়া জংশনে রেলওয়ের ১৫০টির মতো রেলওয়ের কোয়ার্টার রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি কোয়ার্টার পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। এই পরিত্যক্ত কোয়ার্টারগুলো মাসিক ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা করে ভাড়া দিয়ে লোকজনকে বসানো হয়েছে। আবার বিদুৎ বিল বাবদ মাসিক আরো ৫০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিত্যক্ত কোয়ার্টার থেকে কোনো ভাড়া রেল পাচ্ছে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরিত্যক্ত কোয়ার্টার থেকে আদায়কৃত ভাড়াগুলো স্টেশন ও জংশন সংশ্লিষ্টরা ভাগভাটোয়ারা করে খাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কোয়ার্টারে বসবাসরত আব্দুল মালিক বলেন, ‘তার কাছ থেকে ২৭ হাজার টাকা কোয়ার্টারের অগ্রিম বাবদ নেয়া হয়েছে। জামানত বাবদ টাকা নেয়ার কিছুদিন পর আমাকে কোয়ার্টার ছাড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। তখন আমি আমার জামানতের টাকা ফেরত চাইলে ওই কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী (কার্য) জাকির হোসেন খাঁন) নানা টালবাহানা করতে থাকেন। আমি বিষয়টি লিখিত আকারে জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজারসহ একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে প্রতিকার চেয়েছি। ’
এ ব্যাপারে কুলাউড়া স্টেশন মাস্টার রুমান আহমদ জানান, বাথরুমের ময়লার ট্রাংকি পরিষ্কারের কাজ চলছে শিগগিরই ঠিক হবে এবং ট্রেনের টাইম ও সিডিউলের বিলবোর্ড সংশোধন আজকেই করে ফেলব।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া জংশনের উপ-সহকারী (কার্য) জাকির হোসেন খাঁনের অফিসে বৃহস্পতিবার গিয়ে না পেয়ে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।