ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণিত বিভাগের প্রভাষক আদীব শাহরিয়ার জামানকে শিক্ষককে বহিরাগতদের মারধরের ঘটনায় নিন্দা, প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।একই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তি দাবি করেন তারা।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম এবং অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার এ নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ঘটনার দিন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ডিউটি ছিল ঢাবি শিক্ষক আদীব শাহরিয়ার জামানের। ডিউটি শেষ করে মেট্রোরেল না থাকায় লোকাল বাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এজন্য নিউমার্কেট থেকে ৩৬ নম্বর বাসে উঠেন। বাসটি মিরপুর-১০ এ প্রায় ২০ মিনিট সিগন্যালে দাঁড়ায়।
কিন্তু সিগন্যাল ছাড়লেও ইচ্ছাকৃতভাবে আরেকবার থামানোর চেষ্টা করে চালক। বাসের অধিকাংশ যাত্রীই ছিল ভর্তি পরীক্ষার্থী। তারা অনুরোধ করেন দ্রুত সিগন্যাল পার হতে। কিন্তু এরপরও কথা না শুনে বায়ে ঘেঁষতে থাকে। একপর্যায়ে ওই শিক্ষক গাড়ির চালক ও সহকারীকে ধমক দেন।
নেতারা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকের ধমকের পর ড্রাইভার ও হেলপারের সঙ্গে তার তর্ক শুরু করে এবং বাস পুরোপুরিভাবে থামিয়ে দেয়। এ সময় ওই শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের স্বার্থ চিন্তা করে চালক-সহকারীকে আবারও বকাঝকা দেন। এরপরই বাসচালক ঢাবির শিক্ষককে হুমকি দেয় যে, মিরপুর-১১ নম্বর স্টেশনে তাকে নামতে দেবে না। লাস্ট স্টপেজে নিয়ে পেটাবে। এ উদ্দেশ্যে অন্য যাত্রীকেও তাদের গন্তব্যে নামতে দিচ্ছিল না। এতে বাধ্য হয়ে ওই শিক্ষক আবারও রাগারাগি করেন এবং ১১ নম্বরের কাছে বাস থামাতে বাধ্য করেন। তখন বাসের ড্রাইভার ও হেলপারও তার সঙ্গে নেমে পড়েন।
একপর্যায়ে চালক বাঁশ জোগাড় করে এনে ঢাবি শিক্ষক আদীব শাহরিয়ার জামানের মাথায় আঘাত করে, পেটে লাথি দেয় এবং গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে ফেলে। এ সময়ে অনেক পথযাত্রী তাদের দেখতে থাকে। যে পরীক্ষার্থীদের জন্য স্ট্যান্ড নিয়েছিলেন, তারাও বাসে বসে জানালা দিয়ে পুরা ঘটনা দেখে। কিছু সময় পর তাড়াহুড়ো করে বাসে উঠে চালক আর তার সহকারী চলে যায়।
সাদা দলের শিক্ষক নেতারা বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ বিষয়ে দ্রুত ঢাবি কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত বাসচালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে মিরপুর সুপার লিংক (৩৬ নম্বর) বাসের ড্রাইভার এবং হেলপারের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক আদীব শাহরিয়ার জামান।