শুক্রবার, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

জবি ছাত্রীকে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে ছাত্রলীগের নির্যাতন

ডেস্ক রিপোর্ট:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩
  • ১২৪ বার পঠিত

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই হলের একাধিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সবাই জবি শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

নির্যাতনে শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম হাফসা বিনতে নূর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর বুধবার (১৭ মে) হল প্রভোস্টের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিজেদের রুমে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাফসা বিনতে নূরের সঙ্গে জুনিয়র রুমমেট রেবেকা খাতুনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে এসে রুম আটকে হাফসাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং হেনস্তা করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে টানা হেনস্তার পর হাফসা অজ্ঞান হয়ে যান।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, তন্বী, ইশিতা, ফাল্গুনী আক্তার, নিনজা শিকদার, ইরা ও নাজমুন নাহার স্বর্ণা। তারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, আমার রুম পাশে হওয়ায় আমি এসে হাফসাকে রুম থেকে বের করে নিয়ে যেতে চেয়েছি। কিন্তু রেবেকা, নিনজা, ফাল্গুনীসহ সকলে তাকে ঘেরাও করে রাখে। এ সময় সে (হাফসা) নিজের মোবাইল নিতে গেলে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মোবাইল আনতে দেয়নি তারা (অভিযুক্তরা)। শুধু তাই নয় এরা রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে ইদানীং হলে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করে। সিনিয়রদের সঙ্গেও একের পর এক বেয়াদবি করে যাচ্ছে তারা। কিন্তু এগুলোর প্রতিবাদ করার কেউ নেই। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এদের কাছে জিম্মি।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী হাফসা বলেন, এটা আমাদের রুমের অভ্যন্তরীণ ঘটনা। কিন্তু আমাদের দুই ব্যাচ জুনিয়র বোটানি বিভাগের রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের ৭/৮ জন মেয়েকে নিয়ে আমাদের রুমে এসে আমাকে মারধর করে। তারা সকলে মিলে রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আমার উপর নিপীড়ন চালায়। নিনজা শিকদার নামে এক মেয়ে এ পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।

অভিযুক্ত নাজমুন নাহার স্বর্ণা বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি ম্যামকে সঙ্গে নিয়ে ওদের রুমে যাই। আমি গিয়ে ওদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু হাফসা আপুকে মারধরের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ঘটনার এক পর্যায়ে ওদের রুমে ম্যামকে রেখে আমি নিচে চলে আসি। তারপর হাফসা আপু নাকি আমাদের ছাত্রলীগের মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছে!

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা হলের আবাসিক শিক্ষক মানসুরা বেগম বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জেরে আবেগের বশবর্তী হয়ে এ কলহের সূত্রপাত। অবস্থা বেগতিক জেনে আমি সেখানে উপস্থিত হই। আমি যাওয়ার পরও তারা আক্রমণাত্মক ছিল। হাফসাকে তারা রুমের বাইরে যেতে ও ফোনটাও ধরতে দিচ্ছিল না। মূলত অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে আসার কারণেই এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, হলে বেশ কিছুদিন ধরে এ ধরনের ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। আমি এ ধরনের ঘটনায় শঙ্কিত। আজ অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আলোচনায় বসেছি। তারপর দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। এরপর থেকে যদি কেউ এরকম কাজ করে তাহলে তাদের সিট বাতিল করা হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com