হারারে স্পোর্টস ক্লাবে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে দুপুরে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচটি টি-স্পোর্টস চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
প্রথম ম্যাচে পাঁচ উইকেটে হারের লজ্জা পায় বাংলাদেশ। ফলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৯ ম্যাচ জয়ের ধারা শেষ হয় বাংলাদেশের। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে হারিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এখন ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে জিম্বাবুয়ে।
প্রথম ম্যাচের হার বাংলাাদেশকে হতাশ করেছে। কারণ ২ উইকেটে ৩০৩ রান করেও ম্যাচটি হারতে হয় তাদের। জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা ও ইনোসেন্ট কাইয়ার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৮ বল বাকি থাকতেই ৩০৪ রানের বিশাল টার্গেট স্পর্শ করে ফেলে জিম্বাবুয়ে। ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কায় জিম্বাবুয়ের জয় নিশ্চিত করেন রাজা। ১০৯ বল খেলে অপরাজিত ১৩৫ রান করেন রাজা। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া কাইয়া ১১০ রানে আউট হন।
বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যাট হাতে দারুণ পারফরম্যান্স করেছে। চার ব্যাটার করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। তবে ব্যাটিং উপযোগী উইকেটে ধীরলয়ে ব্যাট করেছেন অধিনায়ক তামিম। ৮৮ বল খেলে ৬২ রান করেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ নষ্ট করার জন্য ফিল্ডারদের দায়ী করেছেন তামিম।
শেষদিকে দ্রুত রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ৪৯ বলে অপরাজিত ৫২ রান করেন তিনি। শেষ ৫ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখে মাত্র ৩৯ রান করে বাংলাদেশ।
আহত হয়ে অবসর নেয়ার আগে ৮৯ বলে ৮১ রান করেন লিটন দাস। তার ফেরার পরই বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। ইনজুরিতে অন্তত তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন ফর্মে থাকা লিটন।
প্রথম পাওয়ার প্লেতে নিজের ধীর ব্যাটিংয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তামিম বলেন, ‘আমরা জানতাম প্রথম ১০ ওভারে টেস্ট ম্যাচের মতো ব্যাট করতে হবে, যেখানে টিকে থাকার চেষ্টা করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘১০তম ওভারের পর সত্যিই উইকেট ভালো পেয়েছিলাম এবং অসাধারণ জুটি হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত ক্যাচ ড্রপ করে আসছি। এর আগে আমি বলেছিলাম ক্যাচ ড্রপ করা আমাদের একদিন ভোগাবে এবং প্রথম ম্যাচটি ছিল ওইদিনই।’
দ্বিতীয় ম্যাচে ক্যাচ না ফেলার উপর জোর দিয়েছেন তামিম। সিরিজে সমতাই আনাই এখন প্রধান লক্ষ্য তাদের। যেহেতু সিরিজটি তিন ম্যাচের তাই দ্বিতীয় ম্যাচে হার ২০১৩ সালের পর জিম্বাবুয়ের কাছে প্রথম সিরিজ হার নিশ্চিত করবে টাইগারদের।
ওয়ানডের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে জিম্বাবুয়ে। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি জয়ই নয় প্রথম কোন টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ নিলো জিম্বাবুয়ে। টি-টোয়েন্টিতে জয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে জিম্বাবুয়েকে।
জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রেগিস চাকাবভা বলেন, ‘অবশ্যই এমন জয় পাওয়াটা সত্যি অনেক আনন্দের। আমি মনে করি এজন্য রাজা এবং কাইয়াকে পুরো কৃতিত্ব দিতে হবে। শুরুর দিকে কয়েকটি উইকেট হারানোর পর তারা যেভাবে লড়েছে এটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭৯টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ৫০টিতে জিতেছে টাইগাররা। হেরেছে ২৯টিতে।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দু’টি পরিবর্তন আসবে বাংলাদেশ দলে। এই ম্যাচে লিটন ও শরিফুলকে পাবে না টাইগাররা।
বাংলাদেশ :
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), আনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও তাইজুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ে :
ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), রেগিস চাকাবভা (উইকেটরক্ষক), তানাকা চিভাঙ্গা, লুক জঙ্গি, ইনোসেন্ট কাইয়া, ওয়েসলে মাধভের, তাদিওয়ানশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, টনি মুনিয়োঙ্গা, রিচার্ড এনগারাভা, ভিক্টর নিয়ুচি, সিকান্দার রাজা, মিল্টন শুম্বা ও সিন উইলিয়ামস