ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর থেকে তার অবস্থান নিয়ে জল্পনা–কল্পনা শুরু হয়। ভারত সরকার এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে তার অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানালেও আজ বৃহস্পতিবার ভারতের গণমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শেখ হাসিনা দিল্লিতে আছেন।
খবরে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লির লোধি গার্ডেনের লুটেনস বাংলো জোনে একটি সুরক্ষিত বাড়িতে রয়েছেন তিনি। ভারত সরকারই তার থাকার জন্য বাড়িটির ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার মর্যাদা অনুসারে তাকে থাকার জন্য বেশ বড়সড় বাংলো দেয়া হয়েছে। সাধারণত এ ধরনের বাংলো ভারতের মন্ত্রী, পার্লামেন্ট সদস্য ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরাদ্দ দেয়া হয়।
তবে দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে, শেখ হাসিনার গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার কথা ভেবে তারা ওই বাংলোর প্রকৃত ঠিকানা বা সড়ক নম্বর প্রকাশ করেনি।
সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার কথা ভেবে যথার্থ প্রটোকল সাথে নিয়ে শেখ হাসিনা মাঝেমধ্যে লোধি গার্ডেনে হাঁটতে বের হন।
শেখ হাসিনার জন্য কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা সাদাপোশাকে ২৪ ঘণ্টা তার চারপাশে থাকেন। বিশিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে তিনি এই পর্যায়ের নিরাপত্তা পাচ্ছেন।
তিনি এই বাড়িতে দুই মাসের বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন। এখানে তার থাকার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনার সাথে একই ফ্লাইটে ভারতে গিয়েছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা। রেহানা যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তবে শেখ রেহানা এখনো বোন শেখ হাসিনার সাথে ভারতে আছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ ভারতের দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কার্যালয়ে সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দিল্লিতেই বসবাস করছেন।
এদিকে, গত সপ্তাহে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল। ২০১০ সালে এই ট্রাইবুন্যাল গঠন করেছিল শেখ হাসিনার সরকার। গত জুলাই ও আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তিনিসহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং আরো ৪৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে এই ট্রাইব্যুনাল।