অনেকেরই পোষা প্রাণীর প্রতি আগ্রহ আছে। আমাদের দেশে একসময় এর হার কম হলেও এখন দিন দিন বাড়ছে। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, পোষা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা অনেক সময় আপনার বিপত্তির কারণ হতে পারে।
শুধু গ্রামে নয়, শহরেও কবুতরপ্রেমীর সংখ্যা কিন্তু কম নয়। ফুসফুসের রোগ ডিফিউজ প্যারেনকাইমাল লাং ডিজিজ হয় কবুতরের কারণেই। এ রোগটিতে আক্রান্ত ব্যক্তি শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বাড়তে থাকে। একসময় আক্রান্ত ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট ছাড়া কোনো কাজ করতে পারেন না। বুকের সিটিস্ক্যান করে এ রোগ নির্ণয় করা যায়। এ রোগের চিকিৎসা নেই বললেই চলে। তাই কবুতর পোষা থেকে সাবধান।
পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে কুকুর আমাদের বেডরুমে ঢুকেছে। এটা আপনার জন্য ক্ষতিকর। কুকুরের মলের মাধ্যমে গোলকৃমিতে আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া মারাত্মক রোগ হাইডাটিড সিস্ট বিভিন্ন অঙ্গ, যেমন– ফুসফুস, যকৃৎ, মস্তিষ্ককে আক্রমণ করতে পারে।
বিড়াল পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয়। কিন্তু গর্ভাবস্থায় বিড়াল বাসা থেকে ছাঁটাই করুন। বিড়াল থেকে টক্সোপ্লাজমোসিস নামক পরজীবী ঘটিত রোগ গর্ভাবস্থায় মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
এ রোগে আক্রান্ত হলে গর্ভপাত হতে পারে। গর্ভের সন্তান বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। যক্ষ্মা উন্নত বিশ্বে নেই বললেই চলে। গেল বছর পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড যক্ষ্মায় আক্রান্ত কয়েকজনকে শনাক্ত করে। তাদের মধ্যে দু’জন মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আক্রান্ত দু’জনের পোষা প্রাণী হিসেবে ছিল বিড়াল। তাই মনে করা হচ্ছে, পোষা প্রাণী হিসেবে বিড়াল যক্ষ্মার ঝুঁকি বাড়ায়। কুকুর-বিড়ালের সংস্পর্শে থাকলে আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েডে আক্রান্তের হার বাড়ে। পোষা এসব প্রাণীর মল, লালা, আঁচড়ের মাধ্যমে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে রোগ-বালাইয়ের জন্ম দিতে পারে।
পোষা প্রাণী বাড়িতে থাকলে অ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্তের হার বাড়ে। অ্যাজমা অনিয়ন্ত্রণের জন্য কিন্তু এরাই দায়ী বলে মনে করেন গবেষকরা। তাই বাসায় শ্বাসকষ্টে কেউ থাকলে পোষা প্রাণী না রাখাই শ্রেয়। পোষা প্রাণীর সংস্পর্শে এলে অবশ্যই সাবান-পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে।
লেখক : ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু
সহকারী অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি, নিনস