ঋতু পরিবর্তনে শিশুদের শরীরে নানা প্রভাব পড়ে। এখন আবহাওয়ার পরিবর্তনও দেখা যাচ্ছে। এই বৃষ্টি তো এই রোদ। এ সময় শিশুদের শরীরে আক্রমণ করে বসতে পারে ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া। তা থেকে সাধারণ ঠাণ্ডা বা জ্বর হতে পারে। এরকম হলে ভয় না পেয়ে কী করণীয় সেটা আগে জানতে হবে।
নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ জিয়াউল কবির বলেন, এই সময় হাঁচি ও কাশি হতে পারে। সঙ্গে অল্প জ্বর থাকতে পারে। এ সময় ভয় না পেয়ে সাধারণ সর্দি কাশিতে যা করণীয় সেগুলো খেয়াল রাখতে হবে। কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত রোগ সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।
• আবহাওয়া অনুযায়ী শিশুকে গরম রাখতে হবে। তবে বেশি ভারী কাপড় না পরানো ভালো। এতে শিশু ঘেমে ঠাণ্ডা বেশি লেগে যেতে পারে।
• সর্দি বা কাশি থাকলে শিশুকে গরম পানির সঙ্গে লেবু ও চিনি, লবঙ্গ ও মধু মিশিয়ে ৫-৬ চা-চামচ করে দিনে ৪-৫ বার খাওয়ালে আরামবোধ হবে।
• অনেক সময় সর্দি হয়ে শিশুর নাক বন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সাধারণ স্যালাইন (খাওয়ার স্যালাইন) ড্রপারের সাহায্যে শিশুর দুই নাকের ছিদ্রে একফোটা করে দিনে দুই থেকে তিন বার দিলে ভালো। পাশাপাশি কটনবাড দিয়ে নাক ভালোভাবে পরিষ্কার করে দিতে হবে।
• দেশের শিশুরা সহজেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। সঠিক সময়ে চিকিত্সা না করালে নিউমোনিয়া মারাত্মক রুপ নিতে পারে। তাই শিশুর এ রোগের লক্ষণ দেখা দেবার সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ভালো।
• এ সময় শিশুকে কুসুম গরম পানিতে গোসল করালে উপকার পাওয়া যায়। গোসলের আগে অলিভঅয়েল ব্যবহার করা উপকারী। রাতে ঘুমানোর আগে গ্লিসারিনের সঙ্গে পানি মিশিয়ে শিশুর হাত-পায়ে লাগাতে পারেন। এতে শীতে ত্বক ভালো থাকবে।
• এই আবহাওয়ায় শিশুদের খাবারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, ঋতু পরিবর্তনের ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিতে পারে। সেই সাথে ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস ইনফেকশন থেকে জ্বর হতে পারে। তাই বাইরের ও বাসি খাবার খাওয়ানো উচিত নয়। ঘরে তৈরি হালকা ধরনের খাবার খাওয়াতে হবে।
• বেশি বেশি পানি এবং তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। তবে কোনোভাবেই যেন ঠাণ্ডা না লেগে যায়। আর ছয় মাসের কম বসসী শিশুদের মায়ের দুধের বিকল্প নেই।
• শিশুর অভিভাবককে অবশ্যই আবহাওয়ার পরিবর্তন বুঝতে হবে। শিশুকে সরাসরি ফ্যানের নিচে রাখা যাবে না। যেকোনো সমস্যা গুরুতর মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।