বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত চলতি বছরের আন্তর্জাতিক পরিবেশ সক্ষমতা সূচকে (ইপিআই) ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭তম। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর ২৩.১০। যার অর্থ হলো বাংলাদেশ বিশ্বের সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে যেগুলোর পরিবেশগত স্বাস্থ্য সবচেয়ে খারাপ। তালিকায় বাংলাদেশের পর রয়েছে শুধু ভিয়েতনাম, মিয়ানমার ও ভারত। বাংলাদেশের ঠিক ওপরে রয়েছে পাকিস্তানের নাম।
বিশ্বব্যাংকের হয়ে এ সূচকটি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল ল্য অ্যান্ড পলিসি এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল আর্থ সায়েন্স ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক। পরিবেশ বিষয়ে ১১টি সমস্যাসংক্রান্ত বিভাগের ৪০টি নির্দেশকের ওপর ভিত্তি করে ১৮০ দেশের জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশগত স্বাস্থ্য ও বাস্তুতন্ত্রের প্রাণবন্ততার নিরিখে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
পরিবেশ সক্ষমতার দিক থেকে ইপিআই সূচকে ৭৭.৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ইউরোপের দেশ ডেনমার্ক। এর পরবর্তী চার দেশ হলো যথাক্রমে যুক্তরাজ্য (স্কোর ৭৭.৭০), ফিনল্যান্ড (স্কোর ৭৬.৫০), মালটা (স্কোর ৭৫.২০) ও সুইডেন (স্কোর ৭২.৭০)। আশ্চর্যজনকভাবে সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে ৮১তম অবস্থানে আছে আফগানিস্তান (স্কোর ৪৩.৬০)। এ ছাড়া ৮৫তম অবস্থানে আছে ভুটান (স্কোর ৪২.৫০), ১১৩তম অবস্থানে মালদ্বীপ (স্কোর ৩৭.৪০), ১৩২তম অবস্থানে শ্রীলংকা (স্কোর ৩৪.৭০) এবং ১৬২তম অবস্থানে আছে নেপাল (স্কোর ২৮.৩০)।
যেসব ক্যাটাগরির ওপর ভিত্তি করে এ সূচক তৈরি করা হয়েছে, সেখানে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩২তম, স্কোর ৩৭.৪০। এ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ ৩২তম ভুটান (স্কোর ৭৯.৬০), ৯৪তম শ্রীলংকা (স্কোর ৫৭.৫০) ও ১১০তম নেপাল (স্কোর ৫১.১০)। একই স্কোর নিয়ে ১৩২তম অবস্থানে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে পাকিস্তান। এ ছাড়া ১৪২তম আফগানিস্তান (স্কোর ৩০.৭০), ১৭১তম মালদ্বীপ (স্কোর ১১.৩০) ও ১৭৯তম ভারত (স্কোর ৫.৮০)। স্থলজ বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় ১৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আছে ১৮.২০ স্কোর নিয়ে ১৫৯তম অবস্থানে। সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকা নিশ্চিতের দিক থেকে ২৯.৯০ স্কোর নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে ৪৮তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৪.৭০ স্কোরে ১৩৬তম।
ইপিআইয়ের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, পরিবেশ সক্ষমতার বর্তমান চিত্র অনুযায়ী ডেনমার্ক ও যুক্তরাজ্যের মতো মাত্র কয়েকটি দেশ ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনার মতো অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চীন, ভারত ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো ক্রমাগত গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ বাড়াচ্ছে।