যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সপ্তাহব্যাপী পরমাণু যুদ্ধ হলে পরিবেশ, মানুষ ও বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের উপর তার প্রভাব কেমন পড়বে, তা নিয়ে গত আগস্টে ‘নেচার’ জার্নালে একটি গবেষণা প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষকদের আশঙ্কা, ওই যুদ্ধের কারণে ৩৬ কোটি মানুষ মারা যেতে পারে। এছাড়া ৫০০ কোটি মানুষ দু’বছরের জন্য খাদ্য সঙ্কটে পড়তে পারে। কেননা বিস্ফোরণের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়ার খাদ্য উৎপাদন বিনষ্ট করবে।
যুদ্ধে কৌশলগত অস্ত্র ব্যবহার করা হবে ধরে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে।
গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাস সায়েন্সেসের অধ্যাপক অ্যালান রবোক জানান, কৌশলগত অস্ত্র বলতে ‘অনেক দূর থেকে ছোড়া হয়েছে’ এমন অস্ত্র বোঝায়।
এর আগে এক গবেষণায় অধ্যাপক রবোক দেখিয়েছিলেন, হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণে প্রায় শূন্য দশমিক পাঁচ টেরাগ্রাম ধোঁয়া সৃষ্টি হয়েছিল। আর সম্প্রতি করা গবেষণায় তিনিসহ অন্য গবেষকরা ধারণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে ১৫০ টেরাগ্রাম ধোঁয়া সৃষ্টি হবে।
নেচার জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের গবেষকরা ২০২৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হবে তাও জানার চেষ্টা করেছেন। তারা বলছেন, ওই যুদ্ধ হলে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ প্রাণ হারাবে। আর ২৫০ কোটি মানুষ দু‘বছরের জন্য খাদ্য সঙ্কটে পড়বেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘ইউনিয়ন অফ কনসার্নড সায়েন্টিস্টের’ গ্লোবাল সিকিউরিটি প্রোগ্রামের ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানী ডিলান স্পলডিং বলেন, ভূমিতে পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ আর আকাশে বিস্ফোরণ-এই দু’য়ের মধ্যে প্রভাবে ভিন্নতা আছে।
আকাশে বোমা ফাটলে অনেক প্রাণহানি হতে পারে। তবে আশেপাশের পরিবেশে তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব কম হতে পারে। কিন্তু ভূমিতে বিস্ফোরণ হলে প্রাণহানির পাশাপাশি পরিবেশ ও মানুষের উপর তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব বেশি হতে পারে। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমা বিস্ফোরণ এবং চেরনোবিল দুর্ঘটনার মধ্যে তুলনা করলে এই বিষয়টার প্রমাণ পাওয়া যায়। কারণ হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বিস্ফোরণে যে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়েছিল তার পরিমাণ চেরনোবিলের চেয়ে প্রায় ৪০ গুণ কম ছিল।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে