অন্য আইনজীবী থাকলে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস সহ প্রতিষ্ঠানটির চার পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা লড়বেন না, এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। সোমবার রাতে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
কালের কন্ঠকে তিনি বলেন, “সন্ধ্যায় আমার চেম্বারে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এসেছিলেন। দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয়েছে।
আলাপে কর্মকর্তা বলেছেন, আমি আগে যেভাবে মামলা পরিচালনা করেছি, সেভাবেই মামলা পরিচালনা করতে। আমি কাল শ্রম আদালতে যাবো।”
এর আগে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানিয়েছিলেন, এ মামলায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর অন্য আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে থাকলে এ মামলা থেকে সরে দাঁড়াবেন তিনি।
অধিদপ্তর সম্প্রতি এ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে সৈয়দ হায়দার আলীকে নতুন করে নিয়োগ দিয়েছে।
সৈয়দ হায়দার আলী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর।
সৈয়দ হায়দার আলী কালের কন্ঠকে বলেন, “শ্রম আদালতে গত ৩১ আগস্ট এ মামলায় আমি এ মামলায় দাঁড়িয়েছিলাম। তখন খুরশীদ আলম খান সাহেবও ছিলেন।”
গত ৩১ আগস্ট শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহনের তারিখ ছিল।
কিন্তু ওইদিন সকালে এই সাক্ষীর বাবা মারা যাওয়ায় বাকি সাক্ষ্য গ্রহন আর হয়নি। পরে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবীদের আবেদনে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর রাখেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূস সহ চারজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেছিলেন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান।
সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে পারেন। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। মামলার অন্য বিবাদী হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও শাহজাহান।
এ মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ড. ইউনূস হাইকোর্টের আবেদন করেছিলেন। হাইকোর্ট সে আবেদন খারিজ করার পর আপিল বিভাগ সে খারিজ আদেশ বহাল রাখলে বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে গত ২২ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহন শুরু হয়।