রবিবার, ১০:৩০ অপরাহ্ন, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

টিকিটের আশায় রেলস্টেশনে রাতের পর রাত

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২
  • ১০৬ বার পঠিত

কমলাপুর রেলস্টেশনে এখন রাত আর দিন নেই। টিকিট না পেয়ে ঠায় দাঁড়ানো যাত্রীদের অনেকে। পরদিন যদি অন্য তারিখের টিকিট পাওয়া যায় সেই আশা তাদের।

ঈদে রেলের আগাম টিকিট নিয়ে এবারো যাত্রীদের অভিযোগের অন্ত নেই। অনলাইনে টিকিট পাচ্ছেন না। রাত জেগে স্টেশনে লাইন দিয়েও টিকিট মিলছে না। নির্ধারিত দিনের টিকিট না পেয়ে তারা আবারো রাত জেগে অপেক্ষা করছেন। পরের তারিখের টিকিট পেতে চান তারা।

যাত্রীদের দাবি, অল্প কিছু টিকিট বিক্রির পর কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে, টিকিট শেষ। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, ট্রেনের টিকিট যাচ্ছে কোথায়?

তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রীদের দাবি সঠিক নয়। তাছাড়া চাহিদার চেয়ে টিকিটও অনেক কম।

এদিকে এবারো গত ঈদে টিকিট জালিয়াতির জন্য অভিযুক্ত সহজ ডটকমকে অনলাইন ও কাউন্টারে টিকেট ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়ায় প্রশ্ন উঠেছে।

কোহিনুর বেগম ও তার এক বান্ধবী ঈদে দিনাজপুরে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। চাকরির পড়াশোনার জন্য তারা ঢাকায় থাকেন। শনিবার রাত ১১টায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য কমলাপুর রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়ান তারা। কিন্তু রোববার সকালে তারা টিকিট পাননি। তারা কাউন্টারে পৌঁছানোর আগেই টিকিটি শেষ হয়ে যায়।

কোহিনুরের সাথে কথা হয় রোববার বিকেল ৪টার দিকে। তিনি জানান, রাতে আমরা স্টেশনেই লাইন ধরে থাকি এখানেই ঘুমাই, খাওয়া-দাওয়া করি। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এভাবে থাকব। তখন এই লাইনে পরবর্তী তারিখের টিকিট দেয়া হবে, যদি পাই এই আশায়।

কোহিনুরের মতো আরো অনেকেই ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধরে টিকিটের আশায় স্টেশনে আছেন। একটি কাউন্টারে তিন শ’ জন টিকিটের জন্য লাইনে আছেন।

জানা গেছে, ওই কাউন্টার থেকে ৫০ জনকে টিকিটি দেয়ার পর বলা হচ্ছে টিকিট শেষ। বাকিরা অপেক্ষা করতে থাকেন পরবর্তী তারিখের টিকিটের জন্য।

আরেক যাত্রী রাসেল আহমেদের অপেক্ষা আরো দীর্ঘ। তিনি শনিবার সকাল ৮টা থেকে টিকিটের জন্য লাইনে আছেন। ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঠাকুরগাঁও যাবেন। তার পাঁচটি টিকিট দরকার। কিন্তু নির্ধারিত চারটিও পাবেন কিনা তিনি নিশ্চিত নন। ৭ তারিখের টিকিট না পেয়ে ৮ তারিখের টিকিটের আশায় লাইনে দাঁড়ানো আছেন তিনি।

তার অভিযোগ, অনলাইনে অনেক চেষ্টা করেও টিকিট কাটতে পারিনি। নির্ধারিত সময়ে সার্ভার বা অ্যাপে ঢুকা যায় না।

তার কথা, তারপরও অর্ধেক টিকিট যদি কাউন্টারে দেয়া হয় তাহলে আমাদের রুটে কাউন্টারে ৬০০ টিকিট দেয়ার কথা প্রতিদিন। কিন্তু ৫০-৬০টি টিকিট দেয়ার পর শেষ হয়ে যায় কীভাবে?

এই অভিযোগ প্রায় সবার। তাদের কথা, অনলাইনে টিকিট পাচ্ছি না। কাউন্টারেও নাই। তাহলে টিকিট যাচ্ছে কোথায়?

কমলাপুর রেলস্টেশনের কাউন্টারে দিনে একবার টিকিট বিক্রি করা হয়। এ সময় টিকিট না পেলে আবার ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অর্থাৎ পরের দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

তাই যারা লাইনে দাঁড়ান তারা নিজেরাই সিরিয়াল নাম্বারের ব্যবস্থা করেন। সেই নাম্বার ধরে অপেক্ষার লাইন সামনে যেতে থাকে।

আর এই লাইনে জায়গা ধরে রাখার জন্য ভাড়ায় লোক পাওয়া যায়। ২৪ ঘন্টা লাইনে দাঁড়ানোর জন্য একজনকে দিতে হয় এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা। সাথে খাওয়া-দাওয়ার খরচ।

জান্নাতুল আরশী অবশ্য এটা বুঝতে পারেননি। আর তাই বিপাকে পড়েছেন তিনি।

তিনি শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় এসে লাইন দাঁড়ান। কিন্তু রোববার সকালে টিকিট পাননি। তার সর্বশেষ সিরিয়াল ছিল ৫০। এরপর সোমবার সকালে টিকিট পাবেন এই আশায় তিনি অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু রোববার দুপুরে ফ্রেস হওয়ার জন্য লাইন ছেড়ে বাইরে গেলে ফিরে এসে দেখেন তার সিরিয়ালটি অন্যরা দখল করে ফেলেছে। তিনি যাবেন গাইবান্ধা।

আরশী বলেন, সারারাত লাইনে থেকে এখন আমি হতাশ। সোমবারও টিকিট পাব কিনা জানি না। তবুও আবার লাইনের পেছনে দাঁড়িয়েছি।

১ জুলাই থেকে ট্রেনের আগাম টিকিট দেয়া শুরু হয়েছে, দেয়া হবে ৫ জুলাই পর্যন্ত। ১ তারিখে দেয়া হয়েছে ৫ তারিখের, ২ তারিখে ৬ তারিখের, ৩ তারিখে ৭ তারিখের, ৪ তারিখে ৮ তারিখের এবং ৫ তারিখে দেয়া হচ্ছে ৯ তারিখের টিকিট।

বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ১০ জুলাই।
সূত্র : ডয়চে ভেলে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com