বুধবার, ০২:৫৭ অপরাহ্ন, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

গৌরনদীতে শারদীয় দূর্গাপূজার চাল কালো বাজারে বিক্রি বঞ্চিত ৮৫টি পূজামন্ডপ

গৌরনদী প্রতিনিধি :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৫ বার পঠিত
আসন্ন শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ৮৫টি পূজামন্ডপে সরকারি বরাদ্দকৃত সাড়ে ৪২ মেট্রিকটন চাল সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে কালো বাজারে কম দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে পূজা উদযাপন কমিটির বিরুদ্ধে। এছাড়া আরও অভিযোগ রয়েছে প্রতি মেট্রিকটন চাল ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করায় প্রায় ৪ লাখ টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে ৮৫টি পূজামন্ডপ।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট থেকে জানাগেছে প্রতি কেজি চালের পাইকারি বাজার মূল্য ৪৮ থেকে ৫৩ টাকা এবং প্রতি কেজি আটার পাইকারি বাজার মূল্য ৩৬ টাকা। আটার দামে চাল বিক্রি করেছে পূজা উদযাপন কমিটি। এমনটাই দাবী সচেতন মহলের।
এবিষয় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপের একাধিক সভাপতি/সম্পাদক অভিযোগ করে জানান, উপজেলার ৮৫টি পূজা মন্ডপে সরকারি ভাবে সাড়ে ৪২ মেট্রিকটন চাল বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এতে প্রতিটি পূজা মন্ডপে ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ পায়। পূজা মন্ডপের বরাদ্দকৃত চাল আনার চার পাচঁ দিন পূর্বে সেচ্ছাসেবক কার্ড সরবারহের নামে প্রথম দফায় মন্ডপ প্রতি ৫’শ টাকা করে অগ্রিম মোট ৪১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দুলু রায়।
চাল উত্তোলনের জন্য গত ৫ই অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে বসে প্রকল্পের কাগজপত্রে প্রতিটি পূজা মন্ডপের সভাপতি/সম্পাদকের কাছ থেকে ৪/৫টি স্বাক্ষর গ্রহন করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওই দিন সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে পূজা মন্ডপে চাল বিতরণ অনুষ্ঠানের সময় পিআইও অফিস খরচ বাবদ দ্বিতীয় দফায় আরও ৫’শ টাকা করে কেটে রেখে প্রতিটি মন্ডপে নগদ ১৮ হাজার ৫’শ টাকা করে বিতরণ করা হয়। এতে সেচ্ছাসেবক কার্ড ও পিআইও অফিস খরচ বাবদ মোট ১ হাজার টাকা নেয়া হলে মন্ডপের তহবিলে ১৮ হাজার টাকা থাকে। পিআইও অফিস ও খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাদের যোগসাজসে পূজা উদযাপন কমিটি প্রতি কেজি চাল ৩৮ টাকা দরে চাল দিলেও কোন কমিটিই এই অনিয়ম ও দুনীর্তির প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে।
গৌরনদী গয়নাঘাটা ব্রিজ সংলগ্না মহাভারত সাহা বাড়ি পূজা মন্ডপের সভাপতি সন্তোষ সাহা জানান গত বছর চালের দাম কম থাকা সত্বেও আমি সরকারী চাল বিক্রির টাকা ও এমপি তহবিল মিলিয়ে পূজামন্ডপে’র জন্য ৩১ হাজার ৫’শ টাকা পেয়েছি। তবে এবার পেয়েছি ১৮হাজার ৫’শ টাকা। চাল যদি আমরা বিক্রি করতাম তাহলে হয়ত ৪/৫ হাজার টাকা বেশি পেতাম।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন অভিযোগ বলেন, আমার জানা মতে আমার অফিসের কেউ টাকা নিয়েছে তা আমার জানান নাই। তবে যদি কোন অনিয় দূর্নিতীর প্রমাণ মিলে তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিব।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ শিহাব উদ্দীন বলেন, যে সকল পূজা মন্ডপের সভাপতি/সম্পাদকরা হাটতে পরেন তারা খাদ্য গুদামে এসে স্বাক্ষর দিয়ে চাল উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন। আর যারা হাটতে পারেন না তারা উপজেলায় গিয়ে স্বাক্ষর দিয়ে চাল চাল উত্তোলন করেছেন। কে বা কারা চাল বিক্রি করেছেন বা কিনেছেন আমি এব্যপারে কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে গৌরনদী উপজেলা পিআইও অফিসে বসে সাংবাদিকদের সাথে গৌরনদী উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দুলু রায় কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন যে প্রতিদিন আমাদের দুই তিন হাজার টাকা খরচ আছে এ পর্যন্ত আমাদের ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে সে কথা তো সাংবাদিকদের জানালো না। স্বেচ্ছাসেবীদের কার্ড বাবদ যখন ৫০০ টাকা কেটে নেওয়া হলো তখনই সবাই সাংবাদিকদের জানায়।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আমার জানামতে গৌরনদী উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি চালের বাজার দর যাচাই বাচাই করে পাশ^বর্তী উপজেলা আগৈলঝাড়া, উজিরপুরের মন্ডপ গুলোতে যত টাকা বিতরণ করেছেন। সেই সমপরিমান টাকা তারাও বিতরণ করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com