এলপিজির (তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস) খুচরা দাম আবারও বাড়িয়েছে সরকার। বেসরকারি খাতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপি গ্যাসের দাম ১ হাজার ৩৯১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৩৯ টাকা করা হয়েছে। ১২ কেজিতে দাম বেড়েছে ৪৮ টাকা। রোববার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে এটি কার্যকর হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম চড়া বলেই দেশে দাম সমন্বয় করা হয়েছে।
রোববার অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সরকারি সাড়ে ১২ কেজি এলপিজির দাম আগের ৫৯১ টাকাই থাকছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতি কেজি এলপিজির নতুন দাম ১১৯ টাকা ৯৪ পয়সা, যা গত মাসের চেয়ে কেজিতে দাম বেড়েছে সাড়ে ৩ শতাংশ। গত মাসে প্রতি কেজি এলপিজির দাম ছিলো ১৬ টাকা ৮৮ পয়সা এ ছাড়া গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ৬৭ টাকা ২ পয়সা, যা আগে ছিল ৬৪ টাকা ৭৮ পয়সা।
সাড়ে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত সব সিলিন্ডারের দামই বাড়ানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেন, অন্তর্জাতিক বাজারে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং মূসকের হার বেড়ে যাওয়ায় এলপিজির দাম বেড়েছে।
গত বছরের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করেছিল বিইআরসি। এর পর থেকে প্রতি মাসে একবার দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এই দুই উপাদানের মূল্য নির্ধারণ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সৌদি সিপি অনুসারে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম বেড়েছে। প্রোপেন ও বিউটেনের দাম প্রতি টন যথাক্রমে ৮৯৫ থেকে বেড়ে ৯৪০ এবং ৯২০ থেকে বেড়ে ৯৬০ ডলারে উঠেছে। প্রোপেন ও বিউটেনের মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় এপ্রিলের জন্য নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাম কমার সম্ভাবনা বিষয়ে জানতে চাইলে বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেন, এটা অনুমান করা খুব কঠিন। ভর্তুকির বিষয়ে তিনি বলেন, ভর্তুকি পুরোপুরি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বেসরকারি এলপিজি খাতে এখন পর্যন্ত কোনো ভর্তুকির সিদ্ধান্ত হয়নি।
দাম ঘোষণার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিইআরসির সদস্য মোহাম্মদ আবু ফারুক, মকবুল ই ইলাহি চৌধুরী, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ।