বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার ও ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে ‘পেপ্যাল’ চালুর বিষয়ে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) আইসিটি বিভাগ, দেশের ফ্রিল্যান্স কমিউনিটি, বাক্কো এবং পেপ্যালের দক্ষিণ এশিয়া সিঙ্গাপুর অঞ্চলের প্রতিনিধিদের মধ্যে এক বৈঠকে এ নিয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক আলোচনা হয়।
ফ্রিল্যান্সাররা ব্যাখ্যা করেন কেন বাংলাদেশের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরবচ্ছিন্ন আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের প্রয়োজনীয়তা এখন অপরিহার্য। পেপ্যালকে ঘিরে দেশে বহুবার আশাব্যঞ্জক ঘোষণা এলেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট মহল জানালেও শেষ পর্যন্ত নীতিগত জটিলতা ও ব্যাংকিং কাঠামোর সীমাবদ্ধতার কারণে উদ্যোগগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দেশের ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে প্রত্যাশা তৈরি হলেও পরে হতাশাও এসেছে।
তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। পেপ্যালের আঞ্চলিক টিম প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসে সরাসরি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক করছে। আইসিটি বিভাগ সক্রিয়ভাবে আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ কারণে এবার আশা যেমন আছে, তেমনি রয়েছে সতর্ক বাস্তববোধ।
পেপ্যাল সেবা চালু হলে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্স অর্থনীতি সরাসরি সবচেয়ে বড় উপকার পাবে। আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে পেমেন্ট গ্রহণ দ্রুত, নিরাপদ ও কম খরচে সম্ভব হবে। অতিরিক্ত চার্জ, সময়ক্ষেপণ এবং জটিল মানি ট্রান্সফার প্রক্রিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। এতে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়বে এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি আরো এগিয়ে যাবে।
স্টার্টআপ, সাস, ই-কমার্স, প্লাগ-ইন বিক্রেতা ও অন্যান্য অনলাইন উদ্যোক্তাদের জন্য গ্লোবাল পেমেন্ট গ্রহণ সহজতর হবে। পেপ্যালের উপস্থিতি ভবিষ্যতে স্ট্রাইপসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের পথও সুগম করতে পারে। এ ছাড়া পেমেন্ট ইকোসিস্টেম আধুনিক হবে, লেনদেন হবে আরো স্বচ্ছ এবং আইটি খাত আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা বাড়াবে।
আলোচনায় উপস্থিত ফ্রিল্যান্সার কাজী মামুনের ভাষায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সময়ের ব্যাপার, তবে আলোচনার আন্তরিকতা ও সরকারি সহায়তা আমাদের আশাবাদী করেছে। যদি নীতিগত বিষয়গুলোর সমাধান হয় এবং পেপ্যাল ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানায়, তাহলে এটি বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য একটি বড় মাইলফলক হবে।