v
গাজীপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ঘোড়ার মাংসকে গরুর মাংস বলে খাওয়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুরের পূবাইলে র্যাবেরঅভিযানে ৫ মণ ঘোড়ার মাংসসহ ৩৭টি রোগাক্রান্ত (অসুস্থ) ঘোড়া উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরের পূবাইল থানাধীন হায়দরাবাদ এলাকার তাকওয়া মসজিদ সংলগ্ন জনৈক শফিকুল ইসলামের বাড়িতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানের বিষয়ে টের পেয়ে ঘোড়ার মাংসের কসাইরা পালিয়ে যাওয়ায় মাংস বিক্রি চক্রের কাউকে আটক করা যায়নি।
অভিযানে র্যাব, পুলিশ, আনসার, গাজীপুর জেলা প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে সদস্যরা অংশ নেন।
স্থানীয়রা জানান, পূবাইল হায়দরাবাদ এলাকার শফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে তার বাড়িতে নির্মাণাধীন একটি শেডে ঘোড়া জবাই করে তা থেকে সংগৃহীত মাংস রাজধানীসহ গাজীপুরের বিভিন্ন হোটেল এবং রেস্টুরেন্টে বিক্রি করেন। জানা যায়, মাংসগুলোকে রেস্টুরেন্টে গরুর মাংস বলে খাওয়ানো হচ্ছিল।
এদিকে স্থানীয়রা এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে মাংস বিক্রি চক্রের সদস্যরা তাদেরকে হুমকি দেন। বারবার প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করার পরও চক্রটি ঘোড়ার মাংস বিক্রি করা বন্ধ করেনি। প্রথমে ১০ থেকে ১৫টি ঘোড়া জবাই করে বিক্রি করলেও বর্তমানে দৈনিক প্রায় ১০০ ঘোড়া জবাই করে বিক্রি করা হয়।
জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগাক্রান্ত অসুস্থ ঘোড়া সংগ্রহ করে গভীর রাতে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর চলে সারারাত তাদের ঘোড়ার মাংসের প্রসেসিং-এর কাজ। এরপর ভোর বেলা রাজধানীসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিএনজি, পিকআপযোগে ক্রেতারা এসে ঘোড়ার মাংস কিনে নিয়ে যান।
আরও জানা গেছে, প্রথমে এটি বৈধ ব্যবসা বলে দাবি করেছিলেন শফিকুল ইসলাম, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে গাজীপুর জেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর এবং গাজীপুর জেলা প্রশাসন তাকে সতর্ক করে ঘোড়া জবাই এবং মাংস বিক্রি নিষেধ করে। পরে শফিকুল ইসলাম এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রকাশ্যে ঘোড়ার মাংস বিক্রি বন্ধ করে গোপনে ব্যবসা প্রসার বৃদ্ধি করেন।
আগে যেখানে ১০টি ঘোড়ার জবাই করে বিক্রি করা হতো, সেখানে এখন দৈনিক ১০০ ঘোড়া জবাই করে বিক্রি করা হয় বলে জানা যায়।
এদিকে রোগাক্রান্ত ঘোড়ার মাংস খেলে মানবদেহে ভয়াবহ রোগ এমনকি ক্যান্সার হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেন শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজের একাধিক চিকিৎসক।
অভিযানের বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইশতিয়াক আহমেদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব, পুলিশ, গাজীপুর জেলা প্রশাসনের সদস্যরা মোবাইলের হায়দরাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ৮টি ঘোড়া থেকে সংগৃহীত ৫ মণ ঘোড়ার মাংস জব্দ করেন। সেইসঙ্গে ৩৭টি রোগা জীর্ণকার ঘোড়া উদ্ধার করে স্থানীয় দুইজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি বলে জেল জরিমানাও করা যায়নি।