রবিবার, ০১:২৯ অপরাহ্ন, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

আসনের ব্যাপারে এখনই নিশ্চিত হতে চায় বিএনপির মিত্ররা

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২ বার পঠিত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিজ নিজ আসনে মনোনয়নের নিশ্চয়তা চান বিএনপির নেতৃত্বাধীন আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্ররা। যেন তারা নির্বাচনের মাঠে পূর্ণ উদ্যমে কাজ করতে পারেন এবং বিএনপির নেতাকর্মীরাও তাদের সহযোগিতা করেন। তবে হাতেগোনা কয়েকজন বাদে জোট শরিকের অধিকাংশকেই এখন পর্যন্ত মনোনয়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। অবশ্য বিএনপির চাওয়া অনুযায়ী অধিকাংশ মিত্র এরই মধ্যে তাদের প্রার্থী তালিকা জমা দিয়েছে। সেই তালিকা এখন যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা চলছে। এ ক্ষেত্রে সংশোধিত আরপিওর খসড়াও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে বড় জোট গঠনের প্রক্রিয়ায়ও রয়েছে বিএনপি। সব মিলিয়ে নির্বাচনের তপশিলের আগেই মিত্রদের আসন বণ্টনের বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে চায় বিএনপি। নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তপশিল ঘোষিত হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কালবেলাকে বলেন, মিত্রদের আসন বণ্টনের বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। এখন আবার সংশোধিত আরপিওর খসড়া অনুযায়ী, জোট শরিকদের নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। এর ফলে এখন বিএনপিকে আরও পর্যালোচনা, অনেক চিন্তাভাবনা করে এ কাজটা করতে হবে।

বিএনপি চলতি অক্টোবর মাসের মধ্যেই ২০০ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে গ্রিন সিগন্যাল (সবুজ সংকেত) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি মিত্রদের আসন বণ্টন নিয়েও বেশ কিছুদিন ধরে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে বিএনপির চাওয়া অনুযায়ী অধিকাংশ মিত্র এরই মধ্যে জমা দিয়েছে তাদের প্রার্থী তালিকা। এখন পর্যন্ত বিএনপির কাছে ১০৩ জনের প্রার্থী তালিকা জমা দিয়েছে যুগপতের শরিকরা। এর মধ্যে ১২ দলীয় জোট ২১ জন, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ৯ জন, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ১৯ জন, এলডিপি ১৩ জন, গণফোরাম ১৬ জন, এনডিএম ১০ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি পাঁচজন, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ছয়জন এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টি-বিপিপি চারজনের প্রার্থী তালিকা দিয়েছে। তবে তালিকা জমা নেওয়ার পর শরিকদের কারও সঙ্গে এখনো বসেনি বিএনপি। এদিকে এখনো প্রার্থী তালিকা জমা না দিলেও এটা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে ছয় দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ এবং গণঅধিকার পরিষদের আলোচনা চলছে। শিগগির গণতন্ত্র মঞ্চ অর্ধশতাধিক এবং গণঅধিকার পরিষদ ৩০ জনের তালিকা দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, মিত্রদের ১০৩ জনের প্রার্থী তালিকা এখন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে রয়েছে। তিনি এই তালিকা যাচাই-বাছাই করছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মিত্র দলের প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা কেমন, প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য দলের প্রার্থী কারা, কে কেমন ফল করতে পারে—এসব বিবেচনা করা হচ্ছে। বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হওয়া নির্বাচন-সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়াও। এখানে বিধান করা হয়েছে যে, ‘নির্বাচনী জোট হলেও প্রার্থীদের নিজ দলের প্রতীকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।’ যদিও সুষ্ঠু রাজনীতি ও নির্বাচনের স্বার্থে এটা পুনর্বিবেচনা করতে শিগগির ইসিকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেবে বিএনপি।

বিএনপি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে মিত্রদের ৫৯টি আসন ছেড়ে দিয়েছিল। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীসহ তৎকালীন ২০ দলীয় জোটকে ৪০টি আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ছেড়েছিল ১৯টি আসন। নিবন্ধন না থাকায় তখন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোট করেছিলেন জামায়াতের প্রার্থীরা। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকায় আগামী নির্বাচনে জামায়াতকেই বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। দুটি দলই এবার তাদের নেতৃত্বে পৃথক নির্বাচনী জোট গঠনে তৎপরতা চালাচ্ছে।

দলীয় সূত্রমতে, শরিকদের জন্য বিএনপি এবার কতটি আসন ছাড়বে, সেটি মূলত নির্ভর করছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন নির্বাচনী জোটের পরিধির ওপর। জামায়াতের বাইরে থাকা অন্য ইসলামী দল ও আলেমদের পাশাপাশি বামপন্থি কিছু দলকেও পাশে চায় বিএনপি। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গেও রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে তাদের। জানা গেছে, বিএনপির আসন ছাড়ের সংখ্যা এবার পঞ্চাশের আশপাশে থাকবে। অবশ্য জোটের পরিসর বড় হলে আসন ছাড়ের সংখ্যাও বাড়তে পারে। জোটের যেসব প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট এলাকায় শক্ত অবস্থান আছে, বিজয়ী হয়ে আসার মতো সক্ষমতা রয়েছে—ঢাকাসহ দেশের এমন বিভিন্ন জায়গায় আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য দেবে বিএনপি।

তবে মিত্রদের গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার বিষয়টি বিএনপির কেন্দ্র কিংবা দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বা দায়িত্বশীল নেতাদের জানিয়ে না দেওয়ায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে বলে জোট নেতারা জানিয়েছেন।

১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার কালবেলাকে বলেন, বিএনপি মিত্রদের মধ্যে যাদের আসন ছাড় দিতে চায়, সেসব আসনে যত দ্রুত সম্ভব জোটের প্রার্থী ঘোষণা করে দিলে প্রার্থীদের জন্য সুবিধা হয়। সেক্ষেত্রে তারা পূর্ণ উদ্যমে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়তে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com