জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন দমনের শর্তে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে।গতকাল রবিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দেড় মিনিটের একটি ভিডিওতে তাকে এই দাবির ইঙ্গিত দিতে শোনা যায়।
চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ‘বন্দর রক্ষা আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন চট্টগ্রাম নগরের কাস্টমস মোড়ে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ইস্যুতে মিছিল ও সমাবেশ করে। সেই আন্দোলনের সঙ্গেই এই বিতর্কিত অর্থ লেনদেনের অভিযোগের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
রবিবার ভিডিওটি প্রথম ফেসবুকে প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব রাহাদুল ইসলাম।
ভিডিওতে দেখা যায়, আফতাব হোসেন রিফাত নামের একজন ব্যক্তি মেসেঞ্জারে নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে কথোপকথনে জড়িত। তিনি নিজামকে প্রশ্ন করেন, ‘যদি মীর ভাইয়েরা আন্দোলন বন্ধ না করে তখন কী করব?’ জবাবে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলন বন্ধ করাবো। তোমারে দিছে, টাকা দিছে?’ উত্তরে আফতাব বলেন, ‘হ্যাঁ’, এবং পরে জানান, ‘পাঁচ’ (পাঁচ লাখ টাকা)। তখন নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আরও বেশি নিতা, প্রেশার দিয়ে… তোমরা দেখো ওর থেকে আরও পাঁচ লাখ নিতে পার কিনা।’
রাহাদুল ইসলাম তার পোস্টে দাবি করেন, ‘সাইফপাওয়ার টেকবিরোধী আন্দোলন দমন করতে গিয়ে নিজাম উদ্দিন ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এটি শুধু দুর্নীতিই নয়, বরং ছাত্র ও জনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’
তিনি আরও জানান, ভিডিওটি তিনি অন্য এক সূত্র থেকে পেয়েছেন এবং এটাই প্রথমবার নয়, এর আগেও নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে গত ৫ জুলাই এক নারী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এতে উল্লেখ করা হয়- ২ কোটি টাকা না দেওয়ায় তার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তখন নিজাম উদ্দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নগর সদস্যসচিব ছিলেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সাময়িকভাবে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও পরে পুনর্বহাল করা হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘এগুলো পুরোনো ভিডিও। আমাকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে পরিকল্পিতভাবে এসব ছড়ানো হচ্ছে। ভিডিওটি যে করেছে, সে লাইভে এসে বিস্তারিত বলবে।’
এ বিষয়ে এনসিপির চট্টগ্রাম নগর শাখার প্রধান সমন্বয়কারী মীর আরশাদুল হক বলেন, ‘আগে অভিযোগ ওঠার সময় আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে তার বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। তাদের ইতিবাচক মতামতের ভিত্তিতেই তাকে দলে রাখা হয়। তবে নতুন করে অভিযোগ আসায় নিয়ম অনুযায়ী আমরা তার কাছে ব্যাখ্যা চাইব।’