বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধোঁয়াশা তৈরি করা হচ্ছে; ডিসেম্বর না জুন না মার্চ, একেক সময় এককটা কথা। এটা তো শেখ হাসিনার কিছু কথা-বার্তার সঙ্গে মিল পাওয়া যায়।’
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ছাত্র-জনতা বিপ্লবে রিকশা, ভ্যান, অটোচালকদের মধ্যে যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবার ও আহত সদস্যদের মাঝে ঈদ উপহার দিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটি।
প্রশ্ন রেখে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কেন এটা হবে? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের রক্তের উপর গঠিত সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অকাতরে জীবনদানকারী শিশু-কিশোর-তরুণ-নারী-রিকশা-ভ্যান শ্রমিকদের চালকদের রক্তের ওপর গঠিত সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৬ বছর বিএনপির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক সংগ্রামে যে আপোসহীন ধারা- যে ধারায় গুম, খুন, ক্রসফায়ারের মধ্য দিয়ে যে অরাজকতা তৈরি করেছিল শেখ হাসিনা সেই ফ্যাসিস্টকে পরাজিত করে গঠিত সরকার। সেই সরকার জনগণের কাছে স্পষ্ট নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে মাসের কথা বলে তারা একটা নির্বাচনের প্রক্রিয়া তৈরি করবে। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো শুনছি ডিসেম্বর, কখনো শুনছি মার্চ, কখনো আবার জুন- এ ধরনের একটা পেন্ডুলামের মতো বক্তব্য ঝুলছে, সরকারের এই দোলায়মান অবস্থা থেকে জাতিকে একটি নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে স্পষ্ট করা দরকার।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘অনেকে আবার বলেন, আরে আন্দোলন কি করা হয়েছে শুধু নির্বাচনের জন্য। আরে ভাই অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন শেখ হাসিনা সুষ্ঠু করেনি বলেই তো আন্দোলন হয়েছে, শেখ হাসিনা অমল-ধবল গদি রক্ষার জন্য দেশকে একটা রক্ত ঝরা কারবালায় পরিণত করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। সে জন্য তার পতন এক ব্যাপক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, অনেক রক্তদানের পর এই অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে আদালতের ঘোষণার বিষয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যখন নির্বাচনের দিন নির্বাচনী কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ভোটারদের, ধানের শীষের নির্বাচনী এজেন্টদের ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হচ্ছে এবং নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে বারবার আক্রমণ করা হচ্ছে এবং আমি নিজেও সেই আক্রমণের শিকার হয়েছিলাম, রক্তাক্ত করা হয়েছিল আমাকে।’
তিনি বলেন, ‘কি সন্ত্রাসী নির্বাচন হয়েছে আপনারা দেখেছেন। সেই অবৈধ নির্বাচন, ভোট ডাকাতির নির্বাচনের বিরুদ্ধেই ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক ন্যায়ের আদালতে সেই সময় মামলা করেছিলেন। সেই মামলার ফলাফল এতদিন পরে পেয়েছেন। এই রায় অত্যন্ত ন্যায়সংগত, এটা সুবিচার পেয়েছেন। ইনশাল্লাহ এই সুবিচারের মধ্য দিয়েই জনগণের মেয়র জনগণের কাতারে ফিরে এসেছেন।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, জাতীয়তাবাদী রিকশা, ভ্যান, অটোচালক দলের প্রধান আরিফুর রহমান তুষার বক্তব্য দেন।