অনেক সময় প্রসাধন ব্যবহার করার পর অ্যালর্জির সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে যাদের ত্বক সংবেদনশীল তাদের এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। চুলকানি, জ¦ালাপোড়া, লালচে ভাব যা-ই হোক না কেন, সবকিছুর জন্য দায়ী অ্যালার্জি।
মেকআপের কারণে তৈরি অ্যালার্জিকে কসমেটিক অ্যালার্জিও বলা হয়। সাধারণত মুখম-ল, ঠোঁট, চোখ, কান ও গলায় এর সংক্রমণ বেশি হয়। এমনকি ফোসকাও পড়তে পারে। বিউটি প্রসাধন থেকে সাধারণত দুই ধরনের অ্যালার্জি হয়। প্রথমটি ইরিট্যান্ট কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস। এর কারণে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জ¦ালাপোড়া, চুলকানি, হুল ফোটার মতো অনুভূতি এবং ত্বক লাল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। অন্য যে ধরন সম্পর্কে জানা যায়, সেটিতে যুক্ত থাকে ইমিউন সিস্টেম। একে অ্যালার্জিক কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস বলা হয়। লক্ষণের মধ্যে ত্বকের রঙ বদলে লাল হয়ে যায়, চুলকানির সৃষ্টি হয়। প্রসাধনের কারণে এই সমস্যা তৈরি হলে নির্দিষ্ট জায়গায় তার প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেমন কারও যদি আইশ্যাডোর কোনো উপাদানের কারণে অস্বস্তি হয়ে থাকে, তাহলে সেটি ব্যবহারের পরে চোখ ও এর চারপাশ ফুলে উঠতে পারে। চোখের পাতাও আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু বাকি জায়গাতে, যেমন গাল কিংবা গলায় বিস্তারের আশঙ্কা কম।
ত্বকে সংবেদনশীলতার পরিমাণ বেড়ে যায়। যেমন সুগন্ধি, প্রসাধন সংরক্ষণে ব্যবহৃত প্যারাবেন, সালফেট, ফরমালডিহাইড, সোডিয়াম বেনজয়েট প্রভৃতি। প্রাকৃতিক কিছু উপাদানও আছে এই তালিকায়। যেমন উদ্ভিদ নির্যাস কিংবা তেল। এসব থেকে তৈরি অ্যালার্জি পৌঁছাতে পারে একজিমা, হাইভ, সেবোরিয়েক অবধি।
সাধারণত সাবান, ডিটারজেন্ট, অ্যান্টিপারসপিরেন্টস, আই মেকআপ, ময়েশ্চারাইজার, শ্যাম্পু, লং ওয়্যারিং লিপ কালার, নেইল পলিশ, হেয়ার ডাই থেকে সবচেয়ে বেশি অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই তালিকার কোনো পণ্য ব্যবহারের আগে কিছু বিশেষ সাবধানতা হতে পারে সমাধান। প্রোডাক্টের গায়ে লেখা প্রতিটি উপাদানের নাম মনোযোগসহ পড়লে জানা যাবে, এতে কোনো অ্যালার্জিক উপাদান উপস্থিত আছে কি না।
কসমেটিক অ্যালার্জি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্যাচ টেস্টিং কার্যকরী। এ জন্য নির্দিষ্ট একটি প্রসাধনী দিনে দুবার টানা ১০ দিন ঠিক একই স্থানে ব্যবহার করলে ধারণা মিলবে এর প্রতিক্রিয়া ত্বকের জন্য ক্ষতিকর কি না। তবে নতুন কোনো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে এই দীর্ঘক্ষণের পরীক্ষায় যেতে না চাইলে স্বল্প সময়েও সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায় রয়েছে। প্রোডাক্ট স্যাম্পল কবজির ভেতরের অংশে অথবা কনুইতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা প্রয়োগ করে সেখানে কোনো প্রকার অস্বস্তি তৈরি হয় কি না, সেটি দেখে নেওয়া যেতে পারে। এতে করেও বড় ধরনের বিপদ থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।