নিহত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলামিস্ট বিভুরঞ্জন সরকার (৭১) নিয়ে তার ছেলে ঋত সরকার ও ভাই চিররঞ্জন সরকার বলেছেন, “কাউকে দোষারোপ করছি না। পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে ঘটনা বেরিয়ে আসুক।”
তারা নিশ্চিত করে বলেন, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সে বিষয়ে তারা মন্তব্য করতে রাজি নন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাত পৌনে ৯টায় মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ শনাক্ত করেন ছেলে ও ভাই। এর আগে একইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গজারিয়া মেঘনা নদীর চরবলাকি থেকে নারায়ণগঞ্জের কলাগাছিয়া নৌপুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
নারায়ণগঞ্জ কলাগাছিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সালেহ আহাম্মদ পাঠান বলেন, “৯৯৯ এর মাধ্যমে আমরা শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টায় সংবাদ পাই। ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাতে বিভুরঞ্জন সরকারের নিখোঁজের ঘটনায় রমনা থানায় জিডি করেন তার ছেলে ঋত সরকার।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, “বাবার অফিসে খোঁজ নিয়েছি, তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এরপর সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেছি, কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি।”
বিভুরঞ্জন সরকার দৈনিক আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৬ আগস্ট থেকে সাত দিনের ছুটিতে ছিলেন।
নিখোঁজ হওয়ার দিনই তার একটি লেখা একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়। ‘জীবনের শেষ লেখা’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই লেখায় তিনি সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা, গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা এবং ব্যক্তিগত জীবনের নানা সংকট ও হতাশার কথা উল্লেখ করেছেন।
সেখানে পারিবারিক অসুবিধা, আর্থিক চাপ এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথাও উঠে আসে।
১৯৫৪ সালে জন্ম নেওয়া বিভুরঞ্জন সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে গেছেন। তার মেয়ে চিকিৎসক এবং ছেলে একজন প্রকৌশলী।
প্রায় অর্ধশতক সাংবাদিকতা জীবনে বিভুরঞ্জন সরকার সর্বশেষ ২০২১ সালের ১০ মার্চ আজকের পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।
পরে ২০২২ সালের ১ জুলাই পদোন্নতি পেয়ে জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হন। তার মৃত্যুতে সহকর্মী ও সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা শোক প্রকাশ করেছেন।