বুধবার, ০৬:০১ অপরাহ্ন, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ধেয়ে আসছে ভয়াবহ বিপদ!

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫
  • ২ বার পঠিত

উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূলের অদূরে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এ অবস্থায় সারাদেশে প্রবল বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা যাচ্ছে আগামী কয়েকদিনে। এদিকে দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি।

আগামী কয়েকদিন এ পরিস্থিতি বজায় থাকলে প্লাবিত হতে পারে বেশ কয়েকটি অঞ্চল, যা বড় ধরনের বন্যায়ও রূপ নিতে পারে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূলের অদূরে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরে আজ সকাল ৬টায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।

মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

এর একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে সক্রিয় এবং অন্যত্র এটি মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

এ অবস্থায় বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেইসঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেইসঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

রোববার (১৭ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেইসঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া, বর্ধিত ৫ দিনও বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে মাত্রই দুদিন আগে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, চলতি আগস্ট মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখের মধ্যে দেশে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা আছে। তার মতে, বিগত ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হয়তো সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার শিকার হতে যাচ্ছে এবার।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক পোস্টে মোস্তফা কামাল পলাশ লিখেন, বাংলাদেশে একটি বড় মানের বন্যার আশঙ্কা করা যাচ্ছে আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে। বাংলাদেশে বর্ষাকালের প্রকৃত একটি বন্যার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ২০২০ সালের পরে প্রকৃতপক্ষে দেশব্যাপী বড় কোনো বন্যা হয়নি। ২০২২ সালে সিলেট বিভাগে ও ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বিভাগে যে বন্যা হয়েছিল, তা ছিল ফ্লাশ-ফ্লাড বা পাহাড়ি ঢল।

তিনি লিখেন, বর্ষাকালের স্বাভাবিক বন্যা বলতে বুঝানো হয় ভারতের গঙ্গা নদী অববাহিকা হয়ে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর মধ্যে প্রবেশ করে উপকূলবর্তী জেলাগুলো প্লাবিত হওয়া। একইভাবে তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর উপকূলবর্তী জেলাগুলোর বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়া।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক আরও লিখেন, আশঙ্কা করা যাচ্ছে ২০২৫ সালের এ বন্যায় পদ্মা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর তীরবর্তী ২০ থেকে ৩০টি জেলা প্লাবিত হতে পারে। সম্ভাব্য এই বন্যাটি আগস্ট মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পদ্মা, যমুনা, তিস্তা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী জেলাগুলোর উপর দিয়ে অতিক্রমের আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com