বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন ক্যাটাগরির ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক)’ পদে নিয়োগ চূড়ান্তের পর যোগদানের জন্য জারি করা প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশে চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
এর ফলে ৩১৭৩ জনের স্ব স্ব পদে যোগদানে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এর আগে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
আদেশে আপিল বিভাগ ছয় সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে রুল নিষ্পত্তি করতে বলেছেন। আর তিন সপ্তাহের মধ্যে পুলিশ প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শওকত আকবরসহ ১৮ জনের প্রাথমিক শুনানি শেষে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
এরপর সরকারপক্ষ আপিল বিভাগে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে।
২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর এ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। পরে ২০২২ সালের ১৮ মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত।
তবে এ নিয়োগ পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস’ হয়েছে দাবি করে গত বছর কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
‘ফাঁস প্রশ্নের টাকায় নিজ পকেটের উত্তর মেলান আবেদ আলী, প্রশ্নফাঁস চক্রের ১১৫ অ্যাকাউন্টে ১২৫ কোটি টাকা লেনদেন’ শীর্ষক একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাকাউন্টটিতে সবচেয়ে বেশি টাকা জমা হয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। ওই বছরের ১৮ মার্চ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ইনস্ট্রাক্টর ও জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার পরদিন ১৯ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ দিনে অ্যাকাউন্টটিতে জমা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। এরপর ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চ যথাক্রমে ২০ লাখ, ১৭ লাখ ও ১৯ লাখ করে চেকের মাধ্যমে মোট ৫৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।
এরপর গত বছরের ২৬ নভেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। মনোনীতদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে ১০ম গ্রেডে নিয়োগে সাময়িকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে।
এরপর ২৩ জানুয়ারি তিন হাজার ১৭৩ জনকে যোগদানের জন্য পৃথক প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়।
রিটকারীদের আইনজীবীর দাবি, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর একই রকমভাবে রেলওয়ের নিয়োগ স্থগিত করা করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে সেটা করা হয়নি। এ ছাড়া সিআইডিতে অভিযোগ এখনো তদন্তনাধীন।