উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা এখনো কমেনি। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত। গত কয়েকদিন ধরে সকালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় রোদের দেখা মিললেও তা শীতের তীব্রতা খুব বেশি কমাতে পারেনি। সকাল ৯টার পর থেকে রোদের দেখা পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও বিকেল গড়াতেই উত্তরের হিম শীতল বাতাস ফের কাঁপিয়ে দেয়।
মৃদু শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব এখনো অব্যাহত। শীতের তীব্রতায় বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। খেটে খাওয়া মানুষজন ঠান্ডায় কাজে নামলেও কষ্ট কমছে না। তবে রোদের কারণে কিছুটা উষ্ণতা পাওয়ায় জনজীবনে খানিকটা স্বাভাবিকতা ফিরেছে।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শীতকালীন ফসল যেমন গম, ভুট্টা, মসুর ও শীতকালীন সবজির জন্য এমন ঠান্ডা আবহাওয়া উপকারী। কিন্তু বোরো ধানের চাষে এ শীত ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত সপ্তাহেও বোরো ধানের বীজতলা ছিল সবুজ, তবে সাম্প্রতিক তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে ধানের চারাগুলো আক্রান্ত হয়েছে।
নওদাবস গ্রামের কৃষক সামাদ মিয়া জানান, প্রতিদিন সকালে ধানের বীজতলায় দড়ি টেনে কুয়াশার পানি ঝেড়ে ফেলা হচ্ছে। এরপর গলিখিন বা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখা হচ্ছে ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষার জন্য। তবুও চারাগুলো হলুদ হতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় বোরো চাষে বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শীতের প্রকোপে শিশু, বৃদ্ধ ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষত দরিদ্র মানুষদের শীতবস্ত্রের অভাবে তাদের কষ্ট দ্বিগুণ হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আজ (বুধবার) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তিনি আরো জানান, আগামী কয়েকদিনে শীতের তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে, তবে উত্তরের হিম বাতাস অব্যাহত থাকবে।