২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৩৬১ জন সাংবাদিক কারারুদ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশে কারাবন্দী হয়েছেন চারজন। তাদের সবাইকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে ধারণা করা হয়।
সাংবাদিকদের নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) গতকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ২০২৪ সালের জেল শুমারির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই তার সমর্থক হিসেবে পরিচিত কয়েক ডজন সাংবাদিক অপরাধ তদন্তের লক্ষ্যবস্তু হন এরপর চারজন গ্রেপ্তার হন।
সিপিজে বলছে, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী কারাবন্দী হওয়া ৩৬১ জন সাংবাদিকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আটক হয়েছেন চীনে। দেশটিতে ৫০ জনকে আটক করা হয়। দ্বিতীয়তে রয়েছে ইসরায়েল। দেশটিতে আটক আছেন ৪৩ জন সাংবাদিক, যাদের সবাই ফিলিস্তিনি। এছাড়া মিয়ানমারে আটক রয়েছেন ৩৫ জন সাংবাদিক। এছাড়া ৩১ জনকে আটক করে চতুর্থ স্থানে বেলারুশ ও ৩০ সাংবাদিকে কারাগারে নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে রাশিয়া।
কারাবন্দি সাংবাদিকদের সংখ্যার ভিত্তিতে সিপিজের করা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম। তিন কারাবন্দি সাংবাদিক নিয়ে প্রতিবেশী ভারত আছে ১৫তম স্থানে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে কারারুদ্ধ তিনজনের মধ্যে দু’জন ২০২৩ সালে কাশ্মির থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত বছর বাংলাদেশ ও ভারতের তুলনায় আফগানিস্তানে কম সংখ্যক সাংবাদিক কারাবন্দি হয়েছেন। দেশটিতে দু’জন সাংবাদিক কারারুদ্ধ হন।
২০২৪ সালে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মধ্যে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৫৪ জন সাংবাদিককে ১০ বছরের বেশি ও ৫৫ জনকে পাঁচ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক প্রতিবেদকরাই সবচেয়ে বেশি আটক হয়েছেন।
সিপিজের প্রতিবেদনে বেলারুশ, রাশিয়া এবং ভিয়েতনামসহ কর্তৃত্ববাদী দেশগুলিতে অব্যাহত দমন-পীড়ন উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে সাংবাদিকরা সরকারী লঙ্ঘন বা ভিন্নমতে প্রতিবেদন করার জন্য কারাবাসের মুখোমুখি হয়েছেন।
মিশর এবং নিকারাগুয়ার মতো দেশগুলোতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটও সাংবাদিকদের কারাগারে উত্থানে অবদান রেখেছে।
সিপিজে বলছে, ২০২৪ সালে এসব আটক, ইঙ্গিত করেছে যে যুদ্ধরত দেশ, একক কর্তৃত্ববাদী দেশ বা রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা।