বৃহস্পতিবার, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট পর্ব-৬

রত্না বাড়ৈ হাওলাদার
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪
  • ৬৫ বার পঠিত

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যুকে ‘হৃদয়বিদারক এক মাইলফলক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল । যেকোনো মহামারির দুই তিনটি ওয়েভ থাকতে পারে। তা সত্যেও জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে স্কুল-কলেজ খুলে দেবার পর বেড়ে যায় করোনার সংক্রমণের হার ।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশজুড়ে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে করোনার এই নতুন স্ট্রেইনে। সবে যখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছিল, সেই সময়ই শক্তি বাড়িয়ে ফিরে এল করোনাভাইরাস নিজের নাম পরিবর্তন করে । শক্তিশালী ভেরিয়েন্ট নাম ধারণ করে । যা নাকি শরীরে প্রবেশ করে তিন চার দিনের মধ্যে ফুসফুসকে এবং হার্টকে ধংশ করে দেয়। তখন অক্সিজেনের কার্যকারিতাও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। আর সেই কারণেই জীবন মৃত্যু মুখে পতিত হয় ।
সবথেকে উদ্বেগের কথা করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ শিশুদের জন্যও যথেষ্ট বিপজ্জ্বনক। প্রথম ঢেউ এ করোনা ভাইরাস শিশুদের ওপর অতটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। কিন্তু নতুন স্ট্রেইনে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও এবং অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। যাদের বয়স এক বছরের চেয়ে কম তাদের ক্ষেত্রেও এই লক্ষণগুলি দেখা যায় – করোনার সাধারণ লক্ষণ হল কাশি, জ্বর, সর্দি এবং মাথা ব্যথা। করোনার এই নতুন স্ট্রেনে বড়দের লক্ষণগুলি শিশুদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এবারে করোনা ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রকে আক্রমণ করছে। এবং পেট খারাপ, বমি, পেট ব্যথা করোনার এই লক্ষণগুলোও সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। তাই সামান্য গ্যাসের সমস্যা ভেবে রোগকে অবহেলা করা উচিত নয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসকেরা আর্জি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। বাইরে সব সময় মাস্ক পরার। দ্বিতীয় তরঙ্গ আটকাতে নতুন কিছু স্বাস্থ্যবিধির পরামর্শও দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য। যেমন বলা হয়েছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমিত হলে অনেক সময়ই করোনা পরীক্ষায় তা ধরা পড়ছে না। অথচ উপসর্গ থাকছে। এ সব ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বলা হয়েছে, এ বার ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে থাকা মানুষ আগের বারের চেয়ে বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হচ্ছে।
হার্ভার্ড হেলথের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, করোনার কারণে শিশুদের স্বাস্থ্যে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। কারোর কারোর মধ্যে করোনার লক্ষণগুলি গুরুতর ভাবে দেখা দিচ্ছি, আবার কারোর মধ্যে কোনও লক্ষণই দেখা যায় না।
সারা বিশ্ব জুড়ে ফের আতঙ্ক তৈরি করছে করোনা ভাইরাস। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউতে ফের হু-হু করে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। তবে কিছুটা হলেও স্বস্তি, কারণ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে অবতরণ করেছে। কিন্তু এই টিকা নিয়েও কি সত্যিই স্বস্তি পাওয়ার উপায় আছে। কারণ সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনা সামনে এসেছে যা আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা আরো জানিয়েছেন, “জীবাণুর কিছু অংশ বা পুরো জীবাণুটাই ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে ঢোকানো হয় খুব কম মাত্রায়। যাতে পুরোদস্তুর রোগ না হয় কিন্তু জীবাণুর দেখা পেয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জীবাণুকে মারার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করতে থাকে । এই অ্যান্টিবডিই হচ্ছে রোগের বিরুদ্ধে বাঁচার রাস্তা।
প্রথমেই বলে রাখা ভালো- এক্ষেত্রে শরীরে নতুন করে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না। তবে শরীরে করোনা প্রতিহত করার মতো যথেষ্ট অ্যান্টিবডিও তৈরি হবে না। তবে যদি কোনও ভ্যাকসিনের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ৯০ শতাংশ হয়, তবে প্রথম ডোজে তা শরীরে বড় জোর ৬০ শতাংশ অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে। দ্বিতীয় ডোজটি নিলে তবেই ৯০ শতাংশ অ্যান্টিবডি তৈরি হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট- দ্বিতীয় ডোজ না নিলে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে টিঁকে থাকা মোটেই সম্ভব নয় ।
একই সঙ্গে আরেকটি বিষয়ও মাথায় রাখতে হবে। জানা গিয়েছে যে দ্বিতীয় ডোজটি নেওয়ার দুই সপ্তাহ পরেই শরীরকে ভাইরাসের মোকাবিলার জন্য পুরোপুরি ভাবে সক্ষম করে তোলে ভ্যাকসিন। অতএব, এই সব দিকে দৃষ্টি রেখে ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়াটিই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
একবার সঠিকভাবে তৈরি হলে ইমিউন সিস্টেম পুরো প্রক্রিয়াটি তার শরীর ধরে রাখে, যাতে পরে ওই জীবাণু হানা দিলে শরীর আবার দ্রুত অনেক অ্যান্টিবডি তৈরি করে তাকে ধবংস করে দিতে পারে। সাধারণভাবে, জীবিত ভাইরাসকে তাপে বা অন্য কোনও ভাবে একটু দুর্বল করে নেওয়া হয়। অথবা মৃত ভাইরাসের কিছু অংশ বা পুরোটাই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে শরীরে ঢোকানো হয়।
প্রসঙ্গ ক্রমে সবার আগে একটি বিষয়ের আলোচনা প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে—কেন অনেকেই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে চাইছেন না? সমীক্ষকরা এক্ষেত্রে সবার আগে দায়ী করেছেন ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে। যাঁরা এর মধ্যেই কোভিড 19-এর প্রথম ডোজটি নিয়েছে, তারা কোনও না কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছে। কারও জ্বর এসেছে, কারও শরীরে তীব্র ব্যথা হয়েছে। অনেকের সমস্যা এক রাতের মধ্যেই উধাও হয়েছে, অনেকের সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লেগেছে চার-পাঁচ দিন। পরিসংখ্যান সামান্য হলেও ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জটিলতায় সমস্ত দেশেই মৃত্যু হয়েছে কিছুসংখ্যক মানুষের । এই সব বিষয় মানুষকে ভয় পাইয়ে দিয়েছে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে কোনও ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার।
এছাড়া ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে না চাওয়ার নেপথ্যে আরও একটি কারণ আছে। ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েও অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। এই দিক থেকে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়েও অনেকের মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আমেরিকার প্রথম সারির বিজ্ঞানী এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি সম্প্রতি হোয়াইট হাউজের এক অধিবেশনে জানিয়েছেন যে সারা বিশ্ব জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, এর মধ্যে কয়েকজনের ভ্যাকসিন নিয়ে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা মোটেও অস্বাভাবিক নয়, বরং তাকে নিয়মের মধ্যেই ধরতে হবে। সব থেকে বড় কথা হলো COVID-19 প্রতিরোধে টিকাগুলো জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
# দীর্ঘ দিন ধরে থাইরয়েডের ওষুধ খেলে কিংবা ডায়াবিটিস ও অ্যালার্জির সমস্যা থাকলেও কি ভ্যাকসিন নেওয়া যায়? –
থাইরয়েড কিংবা ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়াতে কোনই অসুবিধা নেই। তবে অ্যালার্জির ব্যাপারটা ভালো করে না-বুঝে মন্তব্য করা মুশকিল। কেননা, অ্যালার্জি কথাটা আমরা অনেক সময়েই যথাযথ অর্থ বুঝে ব্যবহার করি না। অধিকাংশেরই কিছু না কিছুতে কমবেশি অ্যালার্জি থাকে। খুব সাংঘাতিক অ্যালার্জির (অ্যানাফাইল্যাক্সিস রিঅ্যাকশন) ইতিহাস থাকলে কিংবা সেই কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নজির থাকলে, টিকাকেন্দ্রের চিকিৎসকের সঙ্গে বিষয়টি ভালো করে আলোচনা না-করে টিকা নেয়া উচিত নয় ।
# ভ্যাকসিন নিলে কী কী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে? –
অন্যান্য টিকার মতোই ইঞ্জেকশন নেওয়ার জায়গাটি লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে ব্যথা, চুলকানি-সহ। গা-হাত-পায়ে ব্যথা, সামান্য জ্বর আসা বা জ্বর-জ্বর ভাব, ক্লান্তি অথবা শীত, মাথা ধরা হতে পারে । তবে বলাবহুল্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে । যতক্ষণ সম্ভব রেস্ট করতে হবে । বেশী ব্যথা অথবা জ্বর অনুভব হলে রেগুলার কোন ব্যথার ট্যাবলেট সেবন করতে হবে ।
# হার্টের অসুখ থাকলে এবং অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি কিংবা বাইপাস সার্জারি হয়ে গেলেও কি করোনার টিকা নেওয়া যায়? –
নিশ্চিন্তে নিতে পারেন। বস্তুত, আপনার অবশ্যই টিকা নেওয়া উচিত। বাইপাস বা অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির পরে অ্যান্টিপ্লেটলেট ওষুধ চলে প্রায় সকলেরই। সে ক্ষেত্রেও টিকা নিতে কোনই সমস্যা নেই। ঔষধগুলো বন্ধ করারও কোন প্রয়োজন নেই।
ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলেও টিকা নেওয়ায় কোনই সমস্যা নেই
# ৫০ উর্ধ ব্যক্তি যদি আট মাস আগে ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয় । তবে কি টিকা নিতে কোনও অসুবিধা আছে? ক’টা ডোজ নিতে পারবে?
না কোনই অসুবিধা নেই । টিকার তো দুটি ডোজই নির্ধারিত রয়েছে । আর সেই কারণে প্রত্যেকেরই উচিত হবে ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ সম্পন্ন করা।
# হাঁপানির জন্য ইনহেলার নেওয়ার অভ্যাস থাকলে কি টিকা নেওয়ায় কোনও বিধিনিষেধ আছে?
অবশ্যই নয় । বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভ্যাকসিনটি নেয়া উচিত । তাদের ক্ষেত্রে টিকা নেওয়াটা আরো বেশী প্রয়োজন ।
# শিশু ও বয়স্কদের জন্য কোন টিকা কতটা নিরাপদ? –
বয়স্কদের জন্য দু’টি টিকারই সুরক্ষা ও কার্যকারিতা বেশ ভদ্রস্থ। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এখনও চলছে বলে ফলাফল অজানা। আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যেই ট্রায়ালের ফলাফল জানা যাবে।
ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলেও টিকা নেওয়ায় কোনও সমস্যা নেই । অবস্থা পরবর্তীতে
মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন করোনাভাইরাস রোগ 2019 প্রতিরোধের জন্য ইতিমধ্যে দ্বিতীয় ভ্যাকসিনের জন্য জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন (ইইউ) জারি করেছে (সিওভিড -19) জরুরী ব্যবহারের অনুমোদন ১৮বছর বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে Moderna COVID-19 ভ্যাকসিন বিতরণ করতে দেয়া হয়েছে।
# করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা মানুষের শরীরে কত দিন টিকে থাকবে? –
ভ্যাকসিনগুলি যেহেতু বয়সে নবীন, তাই এর কার্যকারিতা কত দিন, নিশ্চিতভাবে বলার সময় এখনও আসেনি। কারণ, পর্যাপ্ত পর্যবেক্ষণের সময়টাই এখনও মেলেনি। তার জন্য দরকার দীর্ঘ সময় ধরে চতুর্থ পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। তবে ট্রায়াল সম্পর্কিত যে গবেষণাপত্র বেরিয়েছে ল্যান্সেটে, তাতে অন্তত আট মাস দাবি করা হয়েছে। তবে অন্তত পক্ষে ৬ মাস ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা থাকবেই, তা বলাই যেতে পারে ।
বিশেষজ্ঞদের মতে যে কোন ব্যক্তি নিজে করা সম্ভব এমন কয়েকটি নতুন পরীক্ষার কথাও বলা হয়েছে এখানে। আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকেই বুঝতে পারেন না তাঁদের সংক্রমণ কতটা গুরুতর। তাঁদের ক্ষেত্রে এখানে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে অন্তত ‘৬ মিনিট হাঁটা’ পরীক্ষা করতে হবে । করোনা সংক্রমিত হলে শরীর কতটা খারাপ, তা বোঝার সবচেয়ে সহজ রাস্তা এটি। এতে বলা হয়েছে, উপসর্গ যে দিন থেকে দেখা দিয়েছে, তার ৩ থেকে ৬ দিন পর্যন্ত রোজ টানা ৬ মিনিট করে হাঁটতে হবে । হাঁটা শেষ করেই অক্সিমিটারে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে । ৬ মিনিট হাঁটার ফলে অক্সিজেনের মাত্রা কি আগের চেয়ে ৫ শতাংশ বা তার বেশি হ্রাস পাচ্ছে? এর অর্থ নিউমোনিয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চিকিৎসক আরো বলেন আসলে এ বার কোভিডের উপসর্গ বদলে গিয়েছে। অনেকেরই জ্বর হচ্ছে না। সবচেয়ে ভযের কথা, এ বার কোভিড থাকা সত্ত্বেও প্রথম ১-২ বারের পরীক্ষায় তা ধরা পড়ছে না। অনেক সময় পরীক্ষার আগে কুলকুচি করে মুখ ধুলে ফল ঠিকঠাক আসে না।’’ তাঁর মতে, উপসর্গ দেখে সন্দেহ হলে একের অধিক বার পরীক্ষা করানো উচিত।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রথমবার করোনা সংক্রমিত হলেও সেভাবে কোনও পার্থক্য বা অসুস্থতার লক্ষন দেখা যায়নি। তবে করোনার দ্বিতীয় বার সংক্রমণের ক্ষেত্রে অনেক জিনগত পরিবর্তন ঘটছে যারফলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হচ্ছে। সুতরাং প্রথমবার করোনা সংক্রমিত হলে হোম আইসোলেশনে থেকে সেরে উঠলেও, দ্বিতীয় বার রোগীকে হাসপাতালে ভরতি করতে হচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে অনেক সময় ভেন্টিলেশনের প্রয়োজনও পড়ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা আরো বলেছেন, করোনা থেকে সেরে ওঠার পরবর্তী তিন মাসে শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা কমলেও নতুন সংক্রমণ ঘটলেই তৎক্ষণাৎ ভাইরাস কণাগুলিকে চিহ্নিত করে ফেলছে ‘বি’ সেল। ফলে নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধে দ্রুত সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়ে যায় শরীরে। অর্থাৎ, দ্বিতীয়বার করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ করা না গেলেও ক্ষতির আশঙ্কা তেমন নেই বললেই চলে। যদিও সবটাই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সতর্কতা বিধি এবং শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ারের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
পুনরাবৃত্তি করছি , COVID-19 প্রতিরোধে টিকাগুলো প্রতিটি মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
বলাবহুল্য Moderna COVID-19 ভ্যাকসিন জরুরী ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে
ফাইজারের ভ্যাকসিন   করোনাভাইরাস রোগ 2019 (COVID-19) ১৬ বছর বা তার বেশি বয়স্ক ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য প্রতিরোধের জন্য জরুরী ব্যবহারের অনুমোদন (EUA) এর অধীনে এফডিএ দ্বারা জরুরী ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়েছে।
বলা হয়েছে Pfizer এবং Moderna টিকার ক্ষেত্রে দুটি ডোজ প্রয়োজন হয়। CDC নির্দেশনাবলী অনুযায়ী, প্রত্যেকের উচিত দ্বিতীয় ডোজটি প্রথম ডোজের কমপক্ষে 21 থেকে 42 দিন (Pfizer) অথবা 28 থেকে 42 দিন (Moderna) পরে নেয়া। যদি ওই সময়ের মধ্যে তা করতে না পারা যায় , তাহলে অন্তর্বর্তী সময়ের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব দ্বিতীয় ডোজটি অবশ্যই নিয়ে নিতে হবে । যত সময়ই পার হোক না কেন দ্বিতীয় ডোজটি অবশ্যই নিয়ে নিতে হবে । কেননা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে টিকাটি অধিক কার্যকর হয়। প্রথম ডোজটি পাওয়ার পরে যদি দ্বিতীয় ডোজের জন্য কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট না থাকে, তবে ভ্যাকসিন প্রদানকারী অথবা যে প্রতিষ্ঠানে টিকা দেয়া হয়েছিল তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে ।
যে স্থানে প্রথম ডোজটি দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকেই প্রত্যেককে দ্বিতীয় ডোজটি নিতে হবে।
# সিগারেট এবং অ্যালকোহল পান করবেন না
সিগারেট এবং অ্যালকোহল পানে আসক্ত ব্যক্তিরা সাবধান । কেননা ভ্যাকসিন পাওয়ার পরে ওই সব থেকে একেবারেই দূরে থাকতে হবে । কমপক্ষে তিন দিন অ্যালকোহল পান করা যাবে না। এছাড়া বাইরের খাবার খাওয়া থেকে সাবধান, একদম এড়িয়ে চলতে হবে ।
সত্যি বলতে কি ইন্ডিয়ার সংকটময় এই বেহাল পরিস্থিতিতে পুরা বিশ্ব ভীষণভাবে মর্মাহত । বিভিন্ন মিডিয়ায় সম্প্রচারিত খবরের মাধ্যমে সমস্ত কিছুই সকলে অবগত রয়েছে ।
আমারা জানি ভারত আয়তনে এবং জনসংখ্যায় পৃথিবীর অন্যতম একটি বৃহৎ দেশ। ২০১৯ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যা ১৩৬ কোটিরও বেশি। পুরা ভারত জুড়ে ২৯টি রাজ্য এবং ৭টি টেরিটোরি রয়েছে এবং এগুলোর অধিকাংশই আয়তনে বাংলাদেশের চেয়ে বড়। ভারতের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গেলে মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি, খাবার, শারীরিক অবয়বসহ সবকিছুই বদলে যার। একবারে ভিন্নতর ।
যা বলছিলাম বিবিসি নিউজ অনলাইনের এক খবরে বলা হয়েছে বি,১,৬১৭ ভ্যারিয়েন্ট ভারতের কয়েকটি রাজ্যে অনেক বেশি সংখ্যায় পাওয়া গেছে।
ভারতে ১৩ হাজার নমুনা সিকোয়েন্স করে আটটি রাজ্যে সাড়ে তিন হাজারের বেশি নমুনায় উদ্বেগজনক ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট পাওয়া গেছে একটি ভাইরাসের মধ্যে যখন দুই ধরণের পরিবর্তন একত্রে মিলিত হয়, তখন সেটিকে ডাবল মিউট্যান্ট বলা হয়।
ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের এক কর্মকর্তা অবশ্য জানিয়েছেন, ডাবল মিউট্যান্ট-এর সাথে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সম্পর্ক পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
এক সংবাদ সম্মেলনে কে বিজয় রাঘবন স্বীকার করেছেন যে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এতোটা ভয়ঙ্কর হবে, সেটি বিশেষজ্ঞরা অনুমান করতে পারেননি।
ভারতের একজন শীর্ষ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেছেন, দেশটিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী।
সংবাদ সম্মেলনে মি. রাঘবন আরো বলেন, “ভাইরাস বেশি মাত্রায় সংক্রমিত হবার ফলে তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী।” তবে তৃতীয় ঢেউ কখন আসতে পারে সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ভারতের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জায়গা হচ্ছে না। এছাড়া তীব্র অক্সিজেন সংকটের পাশাপাশি মরদেহ সৎকার নিয়েও সংকট তৈরি হয়েছে। মর্মান্তিক । যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয় ।
শোনা গিয়েছে সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য কয়েকটি রাজ্যে স্থানীয়ভাবে লকডাউন আরোপ করা হলেও দেশজুড়ে লকডাউনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আমারা প্রত্যেকেই ভারতের মর্মান্তিক করোনা পরিস্থিতির বিষয়ে অবগত রয়েছি । লিখতে গেলে একটি বই প্রকাশ হয়ে যাবে । পরবর্তীতে আরো অনেক বিষয়ে লেখার প্রত্যাশা রাখছি । লেখাটি বাংলাদেশকে ভয়াবহ করোনা আক্রান্ত পরিস্থিতির পূর্বে লেখা । এর পরবর্তীতে আরো বিষয়গুলো বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব

রত্না বাড়ৈ হাওলাদার
কবি সাহিত্যিক গল্প লেখিকা
আমেরিকা

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com