শনিবার, ০৭:৫০ অপরাহ্ন, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

শিশুর জ্বরে প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু কথা

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২
  • ১১৯ বার পঠিত

জ্বর মোটেও নিজে কোনো রোগ নয়। এটি রোগের একটি লক্ষণমাত্র। বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণে জ্বর হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। আবার জ্বরেরও রয়েছে নানা রকম প্রকাশ। ভীষণ জ্বর, মারাত্মক জ্বর, জ্বরে গাঁ পুড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হালকা হালকা জ্বর, গায়ে গায়ে জ্বর, জ্বর ভাসে না, ভেতরে-ভেতরে জ্বর কিংবা রাতে-রাতে জ্বর। জ্বরের প্রকাশভঙ্গি যা-ই হোক না কেন, জ্বর কখন বলব এবং কখন চিকিৎসা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন, তা নির্দিষ্ট করে জানা খুবই জরুরি।

জ্বর হলো শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি বা তারও বেশি। শিশুর শরীরের তাপমাত্রা শারীরিক শ্রম, গোসল, অতিরিক্ত জামা-কাপড় পরিধান করাসহ বিভিন্ন কারণেই বাড়তে বা কমতে পারে। এমনকি সময়ভেদেও তাপমাত্রার পার্থক্য হতে পারে। যেমনÑ বিকালে ও সন্ধ্যায় তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে যেতে পারে (০.৫ থেকে ১.৫ ডিগ্রি)। আবার সকালের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকতে পারে। আর তাই যতক্ষণ পর্যন্ত শিশুর মলদ্বারের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি অথবা তা থেকে কম থাকবে ,ততক্ষণ জ্বর বলা কঠিন। বগলে, জিভের নিচে কিংবা কানেও তাপমাত্রা পরিমাপ করা যায়। তবে মলদ্বারের তাপমাত্রাই সঠিক ও নির্ভুল তাপমাত্রা।

শিশুর জ্বর আসা মানে তার উৎপত্তি কোনো না কোনো রোগ, যা খুঁজে বের করা এবং চিকিৎসা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তবে জ্বর এলে প্রাথমিক কী করবেন এবং কীভাবে জ্বর কমিয়ে রাখবেন, সেটাই আপনার জানা আবশ্যক। শিশুর সব জামা-কাপড় খুলে দিন। তবে হালকা কাপড় রাখা যেতে পারে। খোলা হাওয়া-বাতাস জ্বর কমাতে সাহায্য করে। তাই ঘরের দরজা-জানালা খোলা রাখুন। তবে মোটেও কনকনে ঠা-া বাতাসে রাখা যাবে না। ফ্যান ছেড়ে রাখুন অথবা হাতপাখা দিয়ে বাতাস করুন। হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে কাপড় ভিজিয়ে তা দিয়ে সারা শরীর বারবার মুছে দিন। তবে তেল বা তৈলাক্ত কিছু শরীরে মাখবেন না। উপকারিতা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়।

শিশু যাতে পানিশূন্যতায় না ভোগে, সেদিকে খেয়াল রাখা বাবা-মায়ের একান্ত জরুরি কাজ। পর্যাপ্ত পানি, শরবত বা ফলের রস পান করতে দিন। প্রস্রাবের দিকে খেয়াল রাখুন। বুকের দুধ পান করতে পারলে তা ঘনঘন ও সময় নিয়ে খাওয়ান। অন্য খাবার যা খেতে পারে, খেতে দিন। খাওয়া মোটেও বন্ধ করবেন না। জ্বরের একটি চার্ট তৈরি করুন। সকাল ও সন্ধ্যা ছয়টা, দুপুর ও রাত ১২টা জ্বর মেপে লিখে রাখুন এবং যখন ডাক্তারের কাছে যাবে, তখন তাকে অবশ্যই দেখাবেন। রোগের লক্ষণ বুঝতে চিকিৎসকের তখন সম্ভব হবে। প্যারাসিটামল সিরাপ বা ট্যাবলেট কিংবা সাপোজিটরি ব্যবহার করুন। জ্বর ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে ৬ ঘণ্টা পরপর প্রতি ৮ কেজি ওজনের জন্য এক চামচ সিরাপ খাওয়ানো যায়। প্যারাসিটামল সাময়িকভাবে জ্বর কমিয়ে আনে, শরীরের অস্বস্তি দূর করে। শিশুর বয়স তিন মাসের কম হলে কোনো অবস্থায়ই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া শিশুকে জ্বরনিয়ন্ত্রক ওষুধ দেবেন না।

উপরিউক্ত সবকিছু শুধু জ্বর কমানোর জন্য। কী কারণে জ্বর হয়েছে, তা জানা এবং চিকিৎসা দেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিকটস্থ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

লেখক : শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং সহযোগী অধ্যাপক, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল-২

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com