ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটের কবলে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগের ১৬ জেলার মানুষ। উত্তরাঞ্চলে কয়েকদিন ধরে চাহিদামতো বিদ্যুতের সরবরাহ করতে না পাওয়ায় গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এই অঞ্চলের মানুষের জনজীবন।
নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৪৪১ মেগাওয়াট। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সরবরাহ কম পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ গত রোববার রাজশাহী অঞ্চলের বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৪৪১ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ ছিল ৩৫০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় বিদ্যুতের ঘাটতি ৯১ মেগাওয়াট। আজ সোমবার রাজশাহী মহানগরীতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত চাহিদার বিপরীতে ৬১ মেগাওয়াট সরবরাহ করতে পেরেছে নেসকো। তাই রাতে রাজশাহী অঞ্চলে এক তৃতীয়াংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
রাজশাহী মহানগরী এলাকার বাসিন্দা গোলাম সারওয়ার বলেন,‘রাজশাহী নগরীসহ জেলায় ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। আধা ঘণ্টাও থাকছে না বিদ্যুৎ। বিদ্যুত সংকটের আসল কারণ নিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জানেন না কী সমস্যা। কবে সমাধান হবে, তাও কেউ বলতে পারছে না। আমরা দ্রুত বিদ্যুত সমস্যার সমাধান চাই।’
নেসকোর প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, ‘জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করতে বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। সমস্যাটা আসলে কী সেটা আমরাও জানি না।’
রংপুর অঞ্চল নেসকো সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের আট জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট আরও চরমে। রংপুর অঞ্চলে ৯২২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে আজ সোমবার সরবরাহ ছিল মাত্র ৫৭০ মেগাওয়াট। দৈনিক বিদ্যুত ঘাটতি ৩৫২ মেগাওয়াট। সোমবার রংপুর মহানগরীতে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল মাত্র ২৯ মেগাওয়াট।
রংপুর শহরের বাসিন্দা ফারুক হোসেন বলেন, ‘২৪ ঘণ্টায় গড়ে আধা ঘন্টাও বিদ্যুৎ থাকছে না। প্রচণ্ড গরমে নগরবাসীর জীবন একেবারের বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমরা দ্রুত বিদ্যুতের এমন ভয়াবহ সংকটের সমাধান চাই।’
জানতে চাইলে নেসকোর রংপুর অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার বলেন, ‘জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই ঘাটতি পূরণে আমাদের ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। কবে নাগাদ এর সমাধান হবে তা বলা সম্ভব নয়।’