মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শারীরিক কিছু জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এভার কেয়ার হাসপাতালে পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে রওনা দিয়ে রাত সাড়ে ৮টায় হাসপাতালে পৌঁছেছেন তিনি।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার।
৩৩ দিন পর কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে এলেন তিনি। মেডিকেল বোর্ড তার স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষার রিপোর্ট মূল্যায়ন করার পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় শারীরিক নানা জটিলতায় চিকিৎসা শেষে ১১ জানুয়ারি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর থেকে তিনি তার গুলশানের বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর আগে গত বছরের ৯ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন।
গত ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পাকস্থলী ও বুকে পানি জমা এবং লিভারে রক্তপাত সমস্যা পরীক্ষা করতে দেশে আসেন তিনজন মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকে চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
বিএনপি প্রধানের পরিবারও বিভিন্ন সময়ে সরকারের কাছে অনুমতি চেয়ে আসছে, কিন্তু আইনমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির মামলায় সাজা স্থগিত করার শর্তে খালেদার মুক্তি হওয়ায় চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।
২০২০ সালে কারাগার থেকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৮ ফেব্রুয়ারি, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পর খালেদাকে পুরান ঢাকা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন খালেদা।
করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে, সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাড়িতে থাকার এবং দেশ ত্যাগ না করার শর্তে তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। পরবর্তীতে এ মুক্তির সময় একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে।