চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।আজ শনিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে চলমান সংঘাত ও সংঘর্ষের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারের সঙ্গে আজ কথা বলেছেন। এ সময় মন্ত্রী সংঘাত ও সংঘর্ষের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অনুরোধ করেছেন।
‘ইতিপূর্বে যারা এই ধরনের সহিংসতায় জড়িত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের নাম ব্যবহার করে যেন কোনো দায়ী ব্যক্তি নিষ্কৃতি না পায়, এ বিষয়ে সচেতন থাকতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি তিনি (মন্ত্রী) আহ্বান জানান। শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল (রবিবার) বেলা ১১টায় আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক এক সভা আহ্বান করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার কে এম নূর আহমদকে নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার।’
জানা গেছে, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায়। গ্রুপগুলো হলো- ছাত্রলীগের বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন, বিজয় ও সিএফসি। এর মধ্যে বিজয় গ্রুপ শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এবং সিক্সটি নাইন গ্রুপ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিনের অনুসারী।
চবি ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে সিক্সটি নাইনের কর্মী কামরুল ইসলাম বিজয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপে যোগ দেন। এ নিয়ে নানা সময় কামরুলের সঙ্গে সিক্সটি নাইনের নেতাকর্মীদের ঝামেলা হয়। গত বুধবার রাতে সোহরাওয়ার্দী হলের রাতে খেতে আসেন দিকে সিক্সটি নাইনপক্ষের এক কর্মী। এ সময় বিজয়পক্ষের কামরুলের সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়।
এ ঘটনা জানাজানি হলে বিজয়ের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে এবং সিক্সটি নাইনের কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সর্বশেষ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সিএফসি ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষে সব মিলিয়ে পুলিশসহ গ্রুপগুলোর অন্তত ৪৫ কর্মী আহত হন।