বরিশালে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে হঠাৎ গতি বেড়েছে। বেশ কিছু মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে, কয়েকটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ, আবার কোনো মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে।বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করতে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, যেহেতু তাঁরা বাদী নন, তাই এ মামলাগুলোকে রাজনৈতিক বলার সুযোগ নেই।বিএনপির নেতা-কর্মী ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল নগরীতে দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৫৭টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই ২০১৪ সালের পর বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫-এর ৩ ধারায় হয়েছে, যা অন্তর্ঘাতমূলক সহিংস অপরাধ।
বরিশাল নগরে বিএনপির মামলা পর্যালোচনার দায়িত্বে রয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ ইমন। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, বরিশাল মহানগরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৫৭টি মামলার মধ্যে ৩টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ। বাকিগুলোর অধিকাংশেরই সাক্ষী ডাকা হচ্ছে। ইমন বলেন, ‘ইদানীং মামলাগুলোর গতি যেন বাড়ছে। পুলিশ সাক্ষী নিয়ে আসছে। মনে হচ্ছে, আসন্ন ভোটের কারণে বিরোধী নেতাদের মামলাগুলো বাড়তি মনিটরিংয়ে রাখছে সরকার।’
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মহসীন মন্টু বলেন, যাঁদের নামে রাজনৈতিক মামলাগুলো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আফরোজা খানম নাসরিন, যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন সিকদার ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম লিপন।
আফরোজা খানম নাসরিন সময়ের কন্ঠধ্বনিকে জানান, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩৮টি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ পর্যন্ত ৯ বার কারাভোগ করেছেন। গত বৃহস্পতিবারও বাস পোড়ানো মামলায় হাজিরা দিয়েছেন। ২০১৩ সালে দায়ের করা ওই মামলাটির হঠাৎ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। ওই মামলায় তখনকার ওসি গোলাম কবির সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন। গত ৯ অক্টোবর অপর একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে দেখেন, যাঁরা না এসে সময় চেয়ে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের আবেদন নাকচ করে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তবে মামলার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, তারা (বিএনপি) বিভিন্ন সময়ে ফৌজদারি অপরাধ করেছে বলে মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলা করেছে। মামলাগুলো তো আওয়ামী লীগ করেনি। তাই এগুলোকে রাজনৈতিক মামলা বলার সুযোগ নেই। সরকার এ ক্ষেত্রে কোনো হস্তক্ষেপও করছে না।