মৌসুমী ফল খেলে শরীর সুস্থ থাকে। আমড়া একটি দেশি মৌসুমী ফল। এইসময় বাজারে সবুজ টক মিষ্টি এই ফল নজর কারে। আমড়া সাধারনত গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের ফল।
আমড়া ফল টক ও সুস্বাদু। আমড়া মূলত আচার, জ্যাম এবং চাটনি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। আমড়া গাছের বিভিন্ন অংশ ডায়রিয়া, কানের ব্যথা, ক্ষত এবং হাইপার অ্যাসিডিটির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। আয়ুর্বেদে এটি অমৃতক নামে পরিচিত।
এর কান্ডের ছাল ট্যানিন এবং স্টার্চ সমৃদ্ধ। বাতের চিকিৎসায় আমড়ার ছাল ব্যবহৃত হয়।
আমড়া ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা চলুন জেনে নেই।
হজমে সাহায্য করে
আমড়া ফল ডায়েটারি ফাইবার সমৃদ্ধ যা স্বাস্থ্যকর পরিপাকতন্ত্র বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফাইবার হজমের স্বাস্থ্যের সাধারণ কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং সেইসাথে দুর্বল হজম এবং গ্যাসের মতো অন্যান্য হজম সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করে।
হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়ায়
আমড়া আয়রনের মত খনিজের ভালো উৎস। যা হিমোগ্লোবিন এবং মায়োগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে। যা শরীরের সমস্ত সিস্টেমে অক্সিজেন স্থানান্তর করে। আয়রন একটি অত্যাবশ্যক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা শরীরের জন্য অপরিহার্য এবং রক্তসল্পতা এবং অন্যান্য রক্তের সমস্যা প্রতিরোধে দুর্দান্ত কাজ করে।
উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে
এ ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং শরীরের কার্যকারিতা যেমন হাড় ও দাঁতের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত এবং বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির মধ্যে একটি যা ফলে পাওয়া যায় এবং প্রাকৃতিকভাবে একটি এজেন্ট হিসাবে কাজ করে যা শরীরের ক্ষতিকারক অক্সিডেশন প্রক্রিয়াগুলিকে বাধা দেয়। ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনেও সাহায্য করে যা ত্বককে সুস্থ ও দৃঢ় রাখে এবং বলিরেখার বিরুদ্ধে কাজ করে।
হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে
আমড়া চর্বি-মুক্ত, সোডিয়াম-মুক্ত, কোলেস্টেরল-মুক্ত ফল এবং ভিটামিন কে-এর একটি ভাল উৎস যা সঠিক হাড়ের স্বাস্থ্যে সাহায্য করে। ভিটামিন কে শুধুমাত্র রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে না, এটি হাড়কে শক্তিশালী করে উন্নত করতেও সাহায্য করে, যার ফলে হাড়ের স্বাস্থ্যগত অবস্থা যেমন হাড় ভাঙা ইত্যাদি প্রতিরোধে সাহায্য করে। অস্টিওপরোসিসের উপর এর প্রভাব ডাক্তারিভাবে প্রমাণিত হয়নি, যদিও বেশিরভাগ মানুষ এই কারণে এটি গ্রহণ করে।
পেশি শক্তি বাড়ায়
থায়ামিন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। পেশির সুস্থতার জন্য থায়ামিন প্রয়োজন। পেশী সংকোচন এবং স্নায়ু সংকেত সঞ্চালনে সহায়তা করে থায়ামিন। আমড়া থায়ামিনের একটি ভালো উৎস। থায়ামিনের অভাবকে বলা হয়ে থাকে বেরিবেরি। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত থায়ামিন না পেলে মেটাবলিজম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা থেকে পেশীর দুর্বলতা, বমিভাবসহ ওজন কমে যাওয়ার মত সমস্যাও দেখা দেয়। আমড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে এই অবস্থার সম্ভাবনা দূর হয়। এবং পেশি শক্তিশালী হয়।
সূত্র : দ্য ওয়েলনেস কর্ণার