বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে বিএনপির কমিটিতে আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে পদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে আওয়ামী লীগের নেতারা পদ প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আর বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন, ওই তিন নেতা আবেদন করে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৩ আগস্ট আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. কবির হোসেন তালুকদার ও সদস্যসচিব বশির আহম্মেদ উপজেলার রাজিহার, বাকাল, গৈলা ও রত্নপুর ইউনিয়নের চারটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। গৈলা ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মনির তালুকদারকে সদস্য করা হয়েছে। রত্নপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য সুরেশ বিশ্বাসকে করা হয়েছে যুগ্ম সম্পাদক। আর বাকাল ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মোসলেম পাইককে।
কমিটি ঘোষণার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। একপর্যায়ে তিন আওয়ামী লীগ নেতা বিএনপির কমিটিতে তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানান। মনির তালুকদার ও সুরেশ বিশ্বাস বলেন, ‘পারিবারিকভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আমরা কোনো দিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। বিএনপির নেতারা অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁদের কমিটিতে আমাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এতে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।’ ভবিষ্যতে বিএনপির নেতারা এমন কাজ করলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়। তাঁরা আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের কাছে তাঁদের দল করার মতো কোনো নেতা-কর্মী নেই। বিএনপি এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে। তা না হলে আওয়ামী লীগের নেতাদের নাম দিয়ে কমিটি ঘোষণা করতেন না।’
মোসলেম পাইক প্রতিবাদলিপিতে বলেন, ‘বিএনপির কমিটিতে আমার নাম দেখে আমি হতবাক ও বিস্মিত হয়েছি। বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে কমিটিতে আমার নাম দিয়েছেন।’
আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. কবির হোসেন তালুকদার বলেন, বিএনপির ইউনিয়ন কমিটিতে থাকতে যাঁরা জীবনবৃত্তান্ত ও পরিচয়পত্রের কপি জমা দিয়ে পদ চেয়েছেন, তাঁদেরই পদ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কের দাবির বিষয়ে আওয়ামী লীগের তিন নেতা বলেন, তাঁদের নিয়ে বিএনপি মিথ্যাচার করেছে। তাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। জনবিচ্ছিন্ন ও দেউলিয়া হয়ে রাজনীতি করা বিএনপিতে তাঁদের পদ চেয়ে আবেদন করার কোনো কারণ নেই।