‘দেশে অন্যান্য পেশাজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়লেও সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা অনিয়মিত। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রেও সাংবাদিকরা পিছিয়ে রয়েছে। সরকারের স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম নীতি থাকলে তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট অনেকের অনীহা রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা শোষণ-বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। সরকার বিষয়গুলো জানলেও এসব ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে মে দিবসের চেতনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।’
আজ সোমবার (১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউনিয়ন কার্যালয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত মহান মে দিবসের আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন।
সভা থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সাংবাদিক নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিল এবং সংশোধনীসহ নবম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ বকেয়াসহ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদ উল আলম বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। তবে সরকারের কিছু কর্মকর্তা আছেন যারা সাংবাদিকদের অধিকারের বিষয়ে উদাসীন।
বিএফইউজের মহাসচিব দীপ আজাদ বলেন, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাংবাদিকদের নিপীড়ন করা হয়। এ সব প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদা আদায়ের লক্ষে সারাদেশে সমাবেশ করা হবে।
বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, মে দিবসের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের তিনটি বিষয় হয়েছিল। আট ঘণ্টা কাজের, আট ঘণ্টা বিশ্রাম ও পরিবারের জন্য বাকি আট ঘণ্টা সংগঠন করার জন্য। সংগঠন করার আট ঘণ্টায় আমাদের সমস্যা হচ্ছে। মে দিবস আমাদেরকে পেশার মর্যাদা শেখায় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শেখায়।
বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, আইন করবেন বাস্তবায়ন করবেন না সেই জায়গায় ইউনিয়নকে অবশ্যই ভূমিকা নিতে হবে। আজকে আমার মর্যাদা নেই। শ্রমিকের একটাই অস্ত্র আন্দোলন সংগ্রাম। আজকে আন্দোলন দেখি না, সংগ্রাম নেই। আমরা সকলে মিলে আন্দোলন করলে সরকারের টনক নড়াতে বাধ্য।
ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, মে দিবসের চেতনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। দেশের সকলের বেতন বাড়ছে। কিন্তু সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা বাড়ছে না। বেতন-ভাতা পাওয়ার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রে যতক্ষণ এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত মহান মে দিবসের চেতনা ও আদর্শ বাস্তবায়ন হবে না, সাংবাদিকদের রুটিরুজি এবং মর্যাদা রক্ষা হবে না।
বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদ উল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন।
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, নির্বাহী সদস্য প্রণব অর্নব, ডিইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ কুদ্দুস, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, দফতর সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, কল্যাণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান চৌধুরী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মহিউদ্দিন পলাশ, সফিকুল করিম সাবু, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আছাদুজ্জামান, ঢাকা সাব এডিটর কাউন্সিলের সভাপতি মামুন ফরাজী প্রমুখ।