১৩ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছে ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমার সিক্যুয়াল ‘ব্ল্যাক ওয়ার’। ছবিটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। অ্যাকশনধর্মী সিনেমাটি ঢাকাসহ দেশের ৪৪টি সিনেমা হলে চলছে। এই ছবি ও বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয় শুভর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- ফয়সাল আহমেদ
বছরের প্রথম সিনেমা হিসেবে মুক্তি পেয়েছে আপনার অভিনীত ‘ব্ল্যাক ওয়ার’। দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন?
দর্শক প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক। যারা ছবিটি দেখেছেন, কেউই বাজে মন্তব্য করেননি। ভালোই বলেছেন। বাকিটা আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। এতটুকু বলতে পারি, যারা দেখছেন তাদের কাছ থেকে নব্বই শতাংশ ইতিবাচক মন্তব্য পেয়েছি। আরও দু-একদিন যাক, তখন বোঝা যাবে ভালোভাবে। দর্শকের সঙ্গে বসে ছবিটি দেখেছি। কেউই হতাশ হয়নি। দর্শক যেমন ছবি দেখতে অভ্যস্ত, ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ ঠিক তেমনই। এটি পরিপূর্ণ একটি ছবি।
দর্শকের সঙ্গে সিনেমা হলে বসে ছবিটি দেখেছেন, আগামী দিনগুলোতেও দেখার প্ল্য্যান আছে নিশ্চয়?
অবশ্যই আছে। আমি এখন (গতকাল সকাল) যাচ্ছি মানিকগঞ্জ। সেখান থেকে সাভারের দিকে আসব। জ্যামের কারণে শিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা করছি, সিনেমা হলগুলোতে কিছু সময়ের জন্য হলেও উপস্থিত হতে।
এর পরের শিডিউল কী?
চট্টগ্রামে যাব। সেখান থেকে চলে যাব কক্সবাজারে, আরিয়ানের (পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান। সিনেমার নাম ‘উনিশ২০’) ছবির শুটিংয়ে। একসঙ্গে সবই করতে হচ্ছে। ১৯ তারিখে ফিরে সেদিনই সন্ধ্যায় আরেকটা শোতে অংশ নেব। এর পর একে একে খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় সিনেমা হলগুলোতে যাব। চেষ্টা করছি, দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে ছবিটির বার্তা পৌঁছে দিতে। বার্তা পৌঁছে না দিতে পারলে দর্শক হলে যাবে না। তাদের তো আগে জানতে হবে, কোথায় কোন ছবিটা চলছে। যদিও চলচ্চিত্রপাড়া এখন বেশ মুখর। অনেক ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে। মানুষের মধ্যে সিনেমা দেখার ঝোঁক বেড়েছে। আশা করি, এতে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ সিনেমা দেখা বেগবান করবে। আমি বলতে চাই, ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ ভালো লাগলে অন্যদেরও বলুন।
আপনি প্রতিটি সিনেমার জন্যই নিজেকে আলাদাভাবে তৈরি করেন। এই সিনেমাও এর ব্যতিক্রম হয়নি?
একটি সিনেমার জন্য কতটা শ্রম-ঘাম ঝরানো সম্ভব, তার উদাহরণ হতে পারে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’। হলে গিয়ে সিনেমা দেখুন। তা হলেই বুঝতে পারবেন। একটুও বাড়িয়ে বলিনি। সত্যি এটাই, এখন পর্যন্ত যত সিনেমায় অভিনয় করেছি, তার মধ্যে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’-এর জন্যই আমাকে সর্বোচ্চ শারীরিক ও মানসিক শ্রম দিতে হয়েছে। তা করতে গিয়েই পড়েছি পায়ের ইনজুরিতে। সেই কষ্ট এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। যতদিন বাঁচব, ততদিন হয়তো বয়ে বেড়াতে হবে।
নাবিদ আল শাহরিয়ারের গল্পটা এখানেই শেষ?
হ্যাঁ, নাবিদ আল শাহরিয়ারের গল্পটার ইতি ঘটছে এই ছবিতে। তাই সবাইকে বারবার দেখার আহ্বান জানাই। শেষ পর্বটাতে আমরা কী করেছি, তা দেখে বিচার করুন। শুধু প্রথম পর্বটা দেখে জাজ করবেন না। আর কোনো সিক্যুয়াল আসবে না। আমি একদম ক্লিয়ার-কাট বলছি, যেহেতু সিনেমা মুক্তি পেয়ে গেছে। এখন আর লুকানোর কিছু নেই। ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর সিক্যুয়াল ‘ব্ল্যাক ওয়ার’; আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছি, এটির কোনো সিক্যুয়াল হবে না। নাবিদের গল্পটা এখানেই সমাপ্তি হচ্ছে। ক্লাইম্যাক্সে গিয়ে আরেকটা ছবির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। একদমই না। আমরা এখানেই গল্পটা শেষ করছি।
চলতি বছরে আপনার অনেকগুলো সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়। জার্নিটা কেমন হবে?
এ বছর আমার প্রস্তুতি একটু ভিন্ন। আমার অভিনীত কয়েকটি সিনেমা দর্শক দেখতে পাবেন। ওটিটির জন্যও একটি ভালো কাজ করতে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, প্রতিটি কাজেই নতুন আরিফিন শুভকে দর্শক আবিষ্কার করতে পারবেন। আশা করি, দর্শকও আমাকে ভালোবাসা দিয়ে আপ্লুত করবেন।
তার মানে সাম্প্রতিক সময়ে দর্শক যে শুভকে দেখে অভ্যস্ত, সেই শুভকে আর পাওয়া যাচ্ছে না?
দেখুন- ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেবের ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ যখন সুপারহিট হলো, দর্শক তাকে সেই লুকেই বারবার দেখতে চাইত। কিন্তু একজন অভিনেতা হিসেবে উনি কি নিজেকে সেই লুকে আটকে রেখেছেন? রাখেননি। রাখা উচিতও নয়। আমিও নতুন নতুন গল্পে, নতুন নতুন লুকে দর্শকের সামনে আসব। চলতি বছর অনেকগুলো সিনেমার প্রস্তুতি নিচ্ছি। যার মধ্যে ‘নূর’ ও ‘মুজিব’ সিনেমা রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। আর শুটিং চলছে ‘উনিশ২০’ সিনেমার, যেটি মুক্তি পাবে আসছে ভালোবাসা দিবসে। দ্রুতই কাজ শুরু করব ‘ফুটবল৭১’ সিনেমার। মানে হচ্ছে, দর্শক ভিন্ন ভিন্ন শুভকে ভিন্ন ভিন্ন সময় দেখতে পাবেন।