আমি আজ রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম এবং নিজেকেও মুক্ত করলাম একটা অসুস্থ সম্পর্ক থেকে। জীবনে সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার থেকে জরুরি আর কিছুই নাই।’ ২০২২ সালের শেষ প্রহরে ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাস দিয়ে সবাইকে অবাক করে দেন। এর পর গেল কয়েক দিনে স্বামী শরিফুল রাজের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। সর্বশেষ নতুন বছরের প্রথম দিন তিনি অভিযোগ করেন, রাজ তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। এমন বয়ান দিয়ে ফেসবুকে রক্তমাখা বিছানার ছবিও প্রকাশ করেন ‘রক্ত’খ্যাত তারকা।
তবে শুরু থেকেই পরীর ধারাবাহিক অভিযোগের বিষয়ে চুপ ছিলেন রাজ। শুধু বছরের প্রথম দিন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন পুত্র রাজ্যকে নিয়ে। গতকাল পরীমনির সব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে রাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরি করি না। আমাকে ছুটি দেওয়ার কিছু নেই। দ্রুতই আইনজীবীর সঙ্গে বসব। সন্তান কার কাছে থাকবে, এ ব্যাপারে তিনি যে আইনি পরামর্শ দেবেন- সেটাই মেনে নেব।’
আত্মপক্ষ সমর্থন না করলে ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ থেকে যায় কিনা, তা জানতে চাইলে রাজ বলেন, ‘ভুল বুঝলে বুঝুক। তবে আমি স্পষ্ট বলি, আমি কোনো ভুল করিনি।’
এদিকে রাজ-পরীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, দুজনের বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সময়ের ব্যাপারমাত্র। যে কোনো মুহূর্তে কাগজে-কলমে তারা আলাদা হয়ে যাবেন। পেছন ফিরে তাকালেই দেখা যায়, পরীমনির বিয়ের ঘোষণার পরই একটা অংশ খুব খুশি হলেও আরেকটা অংশ তাদের সম্পর্ক টিকে থাকার ব্যাপারে সংশয়ে ছিল। তাদেরও ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সূত্রে জানা গেছে, দুজনের সংসারজীবন ভালো যে কাটছিল না, এটা শুধু এত দিন তাদের কাছের মানুষেরা জানতেন। তারা নানাভাবে দুজনকে বুঝিয়েছেনও। নিজেরাও নিজেদের মতো করে চেষ্টা করেছেন সম্পর্কটাকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু কিছুতেই যেন তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। দুজনের সম্পর্কের অবনতির কারণে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্তও ঘটে। এমনও শোনা গেছে, কয় দিন আগে পরীমনির হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কারণটাও সম্পর্কের অবনতিতে হয়েছে।
পরী-রাজের সম্পর্ক যে আর টিকছে না, সেটি স্পষ্ট করেন রাজও। সম্পর্ক জোড়া লাগবে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে ‘পরাণ’খ্যাত তারকা বললেন, ‘না, আর হবে না।’
পরীমনি ও রাজের বিয়ের ঘোষণার কয়েক মাসের মধ্যেই ছেলে রাজ্যের জন্ম হয়। ফেসবুকে দেওয়া বিভিন্ন পোস্ট এবং দুজনের কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছিল, বিয়ের ঘোষণার পর থেকেই তারা বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। সময়টাকে দারুণভাবে উপভোগ করছিলেন। ভেতরে ভেতরে যে সম্পর্কটা বিচ্ছেদের দিকে গড়াচ্ছিল, তা তাদের খুব ঘনিষ্ঠজনেরা আভাস দিয়েছিলেন। সেই আভাস বাস্তবে রূপ দেন পরীমনি নিজে। বছরের শেষ দিনে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তিনি যা বললেন, তাতে এটাই স্পষ্ট, ঘনিষ্ঠজনেরা মোটেও ভুল কিছু বলেননি।