বুধবার, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরনে গৌরনদীতে স্মরন সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দেশজুড়ে ভোগান্তি, কারণ জানা যায়নি

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ৯২ বার পঠিত

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার ছয় ঘণ্টার বেশি সময় বিদ্যুৎহীন ছিল ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলো। কিন্তু রাত ১২টার সময়েও দেশের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎহীন ছিল বলে জানা যাচ্ছে।

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর একটা পর্যায়ে পুরো দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে এসব জেলার মানুষ ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন।

এক মাসের ব্যবধানে এটি দ্বিতীয়বারের মতো দেশে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটলো। এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর একবার গ্রিড বিপর্যয় হয়েছিল। তখন কুষ্টিয়া, যশোরসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো প্রায় দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, যমুনা সেতুর পূর্ব পাশের ন্যাশনাল গ্রিডে দুপুর ২টা ৫ মিনিটে বিপর্যয় হয়েছে। এর ফলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বড় একটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে এমন একটি সময়ে যখন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা চলছিল। বিদ্যুৎ না থাকায় পূজা মণ্ডপগুলোয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়।

তবে কেন জাতীয় গ্রিডে এই বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে, তা জানাতে পারেননি কর্মকর্তারা।

জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জাতীয় গ্রিডে কী কারণে এই বিপর্যয় – তা জানার জন্য দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

তিনি লিখেছেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে রাত ৯টার মধ্যে গ্রিড রিস্টোর করা সম্ভব হয়েছে। এখনো অল্প কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ আসেনি বা স্বল্প সময়ের জন্য এসেছিল- সে সব এলাকার গ্রাহকগণ আরেকটু ধৈর্য্য ধরুন। ধীরে ধীরে লোড বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মূল সঙ্কট কেটে গেছে। দ্রুতই আপনারা বিদ্যুৎ পাবেন।’

তিনি আরো লিখেছেন, পূর্বাঞ্চলের বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, যেমন- ঘোড়াশাল, আশুগঞ্জ, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু করে ধীরে ধীরে সিস্টেম স্বাভাবিক করা হচ্ছে। ঢাকায় ২৩০০ মেগাওয়াটের বিপরীতে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে ১৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা একেবারে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, ঘোড়াশালে গ্রিড বা বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো একটি লাইন ট্রিপ করেছে। সে লাইনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অন্য লাইন ওভারলোড হয়ে সেটা ট্রিপ করেছে। এর ফলে পূর্বাঞ্চলের গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বল্পতা দেখা দেয়।’

দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমেই সারাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে এর আগে এ ধরনের বড় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালের ৩ মে। সেইবার আকস্মিক গ্রিড বিপর্যয়ের পর উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমের ৩২টি জেলা কয়েক ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।

বিদ্যুৎহীনতায় চরম ভোগান্তি
মঙ্গলবার দিনের ব্যস্ততম সময়ে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পরেন অসংখ্য মানুষ।

বিদ্যুৎ না থাকার কারণে হাসপাতাল, টেলিযোগাযোগ, ব্যাংকের লেনদেন ব্যাহত হয়। বিদ্যুতের কারণে অনেক অফিস ও কারখানার কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে হয়েছে।

জেনারেটরের ডিজেল কিনতে অনেককে পাম্পগুলোয় ভিড় করতে দেখা গেছে। সড়ক বাতিগুলোও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরে একপ্রকার ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। বহুতল ভবনগুলোয় এক পর্যায়ে জেনারেটর সেবাও বন্ধ করে দেয়া হয়।

বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাও ব্যাহত হয়। টেলিটক বাদে অন্য মোবাইল অপারেটরগুলো তাদের ফেসবুক পাতা ও ক্ষুদে বার্তায় সেবা বিঘ্নের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।

বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অনেক এটিএম বুথ থেকেও টাকা তোলা যায়নি বলে জানা গেছে।

রাত ৮টার পর কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরে আসতে শুরু করলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এমনকি ঢাকাতেই রাত ১০টার সময়েও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না বলে জানা গেছে।

ঢাকার অনেক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। বড় অনেকগুলো বেসরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা নিতে পারেননি রোগীরা।

শোয়েব আহমেদ নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী জানিয়েছেন, দুপুরে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর জেনারেটর থেকে কয়েক ঘণ্টা তারা সাপোর্ট পেয়েছিলেন। এরপর অফিসের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু বাসায় ফিরেও তাকে অন্ধকারে থাকতে হয়েছে।

ঢাকার কোনো কোনো এলাকার বাজারে মোমবাতি কেনার হিড়িকও পড়ে যায়।

পলাশ মাহবুব নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। এই সময়ের মধ্যে ৫ টাকার মোমবাতি ১৫ টাকায় কিনেছি।’

সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com