জ্যামাইকার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানের সহজ জয় তুলে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। চলে এসেছে টানা অপরাজিত থাকার বিশ্বরেকর্ডের খুব কাছেও। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নেমে এ আর্জেন্টাইন তারকা তার বাঁ পায়ের জাদুতে করেছেন জোড়া গোল।
বিশ্বকাপের আগে শেষ আন্তর্জাতিক ফুটবলের উইন্ডোর শেষ ম্যাচে মেসিকে তো বটেই, রড্রিগো ডি পলকেও দলে রাখেননি কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি। জায়গা হারান পাপু গোমেজও। একাদশে ফেরেন ক্রি ভচশ্চিয়ান রোমেরো, এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, আনহেল ডি মারিয়া, ইউলিয়ান আলভারেজরা।
প্রথমার্ধের নিষ্প্রভ আধিপত্য দেখায় আর্জেন্টিনা। ১৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের বিপৎসীমায় ঢুকে পড়েন লাওতারো মার্টিনেজ। ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকার কাট-ব্যাক করেন ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার অরক্ষিত আরভারেজকে। ডি-বক্সের ভেতর থেকে তার সহজ গোলে এগিয়ে যায় দল। জাতীয় দলে এটি তার দ্বিতীয় গোল। পাঁচ মিনিটের মাথায় আলভারেজ বল বাড়িয়ে দেন জিওভানি লো চেলসোকে। তবে সে যাত্রায় আর গোল পায়নি আর্জেন্টিনা।
শুরুর দিকে এগিয়ে যাওয়া আর্জেন্টিনা ব্যবধান আর বাড়াতে পারছিল না। রক্ষণ দারুণভাবে সামলে সমতায় ফেরার আশায় ছিল জ্যামাইকা।
দ্বিতীয়ার্ধে দ্বিতীয় গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৮৬ মিনিট পর্যন্ত। তিনি বলটা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন লো চেলসোকে। তাকে ট্যাকল করে বলটা কেড়ে নিতে চেয়েছিল জ্যামাইকার রক্ষক। তবে ব্যর্থ হয়ে বলটা যায় মেসির পায়ে। তিনি জটলা ভেদ করে নেন শট, আর তা গিয়ে জড়ায় জালে।
ফরোয়ার্ডের ফুটবলারদের একের পর এক সুযোগ মিসের মহড়ায় দ্বিতীয়ার্ধে স্ক্যালোনি লাউতারো মার্টিনেজকে তুলে মাঠে নামান মেসিকে। মাঠে নামার ১৩ মিনিট পরই গোলের দারুণ সুযোগ পান মেসি। তবে ৬৮ মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে তার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান জ্যামাইকান গোলরক্ষক। একের পর এক আক্রমণে মেসি অবশেষে ম্যাচের ৮৬ মিনিটে পান কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা।
ডিবক্সের বাইরে থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে জ্যামাইকান গোলরক্ষককে পরাস্ত করে তিনি বল জড়ান জালে। এর তিন মিনিট পরই ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান মেসি। এবার তিনি বল জালে জড়ান ফ্রি কিক থেক। মেসি সাধারণ ফ্রি কিকে বল তুলে মারলেও ৮৯ মিনিটে জ্যামাইকানদের বোকা বানিয়ে তিনি গড়ানো শট নেন, ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি গোলরক্ষক। শেষ পর্যন্ত তার জোড়া গোলে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের ৬৭ শতাংশ সময় বল ছিল আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে। গোলমুখে তাদের নেয়া ১৭টি শটের আটটি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে, জ্যামাইকা গোলমুখে দুটি শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি।
এই জয়ের ফলে আর্জেন্টিনার অপরাজেয় যাত্রা গিয়ে ঠেকল ৩৫ ম্যাচে। বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অপরাজিত থাকার চলমান রেকর্ড এটিই। টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অপরাজিত থাকার ক্ষেত্রে আর্জেন্টিনার সামনে ছিল শুধু ব্রাজিল, স্পেন ও ইতালি। টানা ৩৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড ছিল ব্রাজিল ও স্পেনের। আজ জ্যামাইকাকে হারিয়ে দুটি দলকে ছুঁয়ে ফেলল আর্জেন্টিনা।
তবে বিশ্বরেকর্ড থেকে আরো দুই ম্যাচ পেছনে আছে মেসির দল। টানা ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থেকে এই রেকর্ডটা গড়েছিল কোচ রবার্তো মানচিনির ইতালি। সেটা ছুঁতে হলে অন্তত বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে অপরাজিত থাকতে হবে মেসিদের। তবে আলবিসেলেস্তেরা যে অপরাজিত যাত্রাটা গ্রুপপর্বের পর আরো চার ম্যাচে ধরে রাখতে চান, সেটা বলাই বাহুল্য, সেটা হলে যে বিশ্বকাপটাও জেতা হয়ে যায়।