বৈধতার অভিযোগ তুলে গ্রিসের বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিদের আবার দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে দেশটির সরকার। দেশটির মেনিদি ও কোরিন্থস ক্যাম্পের ডিটেনশন সেন্টারে থাকা কয়েকজন বাংলাদেশি জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে মেডিকেল পরীক্ষার কথা বলে ৭০ জন বাংলাদেশিকে গোপনে ক্যাম্পে থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের মোবাইল ফোনসহ যাবতীয় মূল্যবান জিনিসপত্র পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তাদের কী অবস্থা, তা কেউ বলতে পারছে না।
ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৪০ জন বাংলাদেশিকে নির্বাসিত করা হয়েছে বলে প্রচার করা হলেও দূতাবাসের কাছে ১৫ জনের একটি নামের তালিকা পাঠিয়েছিল গ্রিস সরকার। কিন্তু দূতাবাস তা গ্রহণ না করে ফেরত পাঠিয়েছে। ফলে দূতাবাসের অনুমতি ছাড়াই বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
কোরিন্থস ক্যাম্পে আট মাস ধরে আটকে থাকা সিলেটের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত সোমবার ক্যাম্পের বিভিন্ন বিল্ডিং থেকে চারজন বাংলাদেশিকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের বর্তমানে কী অবস্থা, তা আমাদের জানা নেই। খুব গোপনে পুলিশ ক্যাম্পে থাকা বাংলাদেশিদের বের করে নিয়ে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ কমিউনিটি নির্বাচন নিয়ে নেতারা এতটাই ব্যস্ত যে, এখন পর্যন্তু এ বিষয়ে তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। নির্বাচনী ইশতেহারে ক্যাম্পে থাকা বাংলাদেশিদের ছাড়িয়ে আনার অঙ্গীকার করলেও এ পর্যন্ত নির্বাচনের কোনো প্রার্থী কোনো ক্যাম্পে গিয়ে তাদের কথা জানতে চাননি। দেখতেও যাননি।
মেনিদি ক্যাম্পে চার মাস ধরে বন্দী আছেন শরিফুল। তিনি বলেন, ‘আমি দেশে গিয়ে আমার পরিবারের সদস্যদের মুখ দেখাতে পারব না। আমার জন্য আত্মহত্যা করাই একমাত্র পথ। একমাত্র দূতাবাসের পক্ষেই সম্ভব এই ডিপোর্ট ঠেকানো।’
গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘গ্রিস থেকে বের করে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে অবশ্যই একটা প্রভাব পড়বে। কিন্তু আইনের ঊর্ধে কেউ নয়, আইনকে সম্মান দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আইন অনুযায়ী এবং গ্রিক সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মূল শর্ত অনুযায়ী আশ্রয় প্রক্রিয়ায় যে সকল আবেদনকারীদের সকল আইনি ধাপ শেষ হয়ে যাবে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে। অন্যথায় গ্রিক সরকার তাদের দেশে ফেরত পাঠাবেন।’