রবিবার, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
গৌরনদীতে দুটি যাত্রীবাহী বাস ও তেলবাহী লড়ির মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত ২০ ‘দিনের পর দিন অনির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ চালাতে দিতে পারি না’ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্তদের বিচার এক বছরের মধ্যে শেষ হবে : চিফ প্রসিকিউটর সাদপন্থী জিয়া বিন কাসিম গ্রেফতার গণহত্যার বিচার করাই আমার প্রধান দায়িত্ব: আসিফ নজরুল গৌরনদীর সন্ত্রাসী বাবলু খান গ্রেপ্তার সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা সাময়িক: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিবালয়ে আগুন গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ: রিজভী এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় বাসের ধাক্কা, নিহত বেড়ে ৬ ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ আইএসপিআরের

ইবাদতের স্বাদ নষ্ট হয় যে কারণে

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৪৬ বার পঠিত

দৃষ্টিশক্তির সঙ্গে অন্তরের যোগসূত্র রয়েছে। কোনো কিছু চোখে দেখার পরই অন্তরে ভাবনা তৈরি হয়, দেখা জিনিসের চিত্র অঙ্কিত হয়। ভালো কিছু দেখলে মানুষের মন ভালো থাকে, বিপরীত কিছু দেখলে মন খারাপ হয়। মানুষের উচিত ভালো ও স্বস্তিদায়ক জিনিসের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া। দৃষ্টিশক্তির অপবব্যহার না করা উচিত। কারণ, এতে দুনিয়া-আখেরাত দুই জীবনেই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

ইসলামে দৃষ্টিপাতের সীমারেখা

কোনো কিছু দেখার ক্ষেত্রে ভালো-মন্দের সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি, নিদর্শন ও নেয়ামত দেখে তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনার কথা বলা হয়েছে। এতে করে সৃষ্টির মাঝে স্রষ্টার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। এই কারণে সওয়াবও হয়।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনের সৃষ্টির মাঝে এবং রাত-দিনের বিবর্তনের মাঝে রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন। যারা যারা দাঁড়িয়ে ও বসে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আসমান জমিনের সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা ফিকির করে। আর বলে হে আমাদের প্রভু! আপনি এসব অনর্থক সৃষ্টি করেননি’। (সূরা আল ইমরান, আয়াত, ১৯১)।

অপরদিকে অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ কোনো দৃশ্য দেখা ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি মুমিন পুরুষদের বলুন তারা যেন তাদের চক্ষু অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থান হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য অধিক বিশুদ্ধতা। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সে বিষয়ে অবগত যা তারা করে’। (সূরা নুর, আয়াাত, ৩০)।

অপর আয়াতে মুমিন নারীদের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আপনি মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের চক্ষু অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থান হেফাজত করে’। (সূরা নুর, আয়াত, ৩১)।

অনিয়ন্ত্রিত দৃষ্টিপাতের ক্ষতি

চোখ আল্লাহ তায়ালার দেওয়া এমন নেয়ামত যা না থাকলে পৃথিবীর অন্য কোনো কিছু ঠিকমতো উপভোগ করা সম্ভব নয়। নিষিদ্ধ জিনিস যেমন বেগানা নারী ও অশ্লীল দৃশ্য দেখার মাধ্যমে এ নেয়ামতের অবহেলা করা হয়। চোখের জ্যোতি কমে যায়।

তাই ইসলামে এসব জিনিস দেখা হারাম করা হয়েছে। হারাম কিছুর প্রতি দৃষ্টিপাত করলে শয়তান অন্তরে কুমন্ত্রণা সৃষ্টি করে। ধীরে ধীরে বড় গুনাহের দিকে ধাপিত হয় মানুষ। এমনকি জিনার মতো মারাত্নক গুনাহের প্রতিও প্রলুব্ধ করে অনিয়ন্ত্রিত দৃষ্টিশক্তি।

এ কারণে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘অনিয়ন্ত্রিত দৃষ্টি হচ্ছে শয়তানের বিষাক্ত তীরগুলো একটি’। (মুসনাদে আশশিহাব, ১/১৯৫)।

এই তীরে বিদ্ধ হওয়া থেকে বাঁচতে হলে দৃষ্টিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নইলে রাশি রাশি নেক-আমল করেও আল্লাহর সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হতে হবে।

ইবনে কাছির রহ. বলেন, দৃষ্টি এমন একটি তীর যা মানুষের অন্তরে বিষের উদ্রেক করে। (ইবনে কাছির ৩/১৭৬)।

তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘তোমরা দৃষ্টিকে নত কর, নিয়ন্ত্রণ করো এবং লজ্জাস্থান হেফাজত কর।’ (তবারানী, হাদিস, ৮০১৮)।
শুধু পরকাল নয়, দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ ও পবিত্রতা রক্ষা না করলে পৃথিবীতে করুণ পরিণতি দেখা দিতে পারে। এ কারণে বিবাহিত জীবনে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

দৃষ্টিশক্তির বিশ্বাসঘাতকতা সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাও মানুষকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘তিনি দৃষ্টিসমূহের বিশ্বাসঘাতকতামূলক কার্যক্রম সম্পর্কে এবং (তারই কারণে) অন্তরে যে কামনা-বাসনা গোপনে জাগ্রত হয় তা ভালভাবেই জানেন।’ (সূরা মুমিন, আয়াত,১৯)।

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম বায়যাবী রহ. লিখেছেন, ‘বিশ্বাসঘাতক দৃষ্টি হলো গায়রে মাহরাম মেয়েদের প্রতি বারবার দেখা, তার প্রতি চুরি করে তাকানো বা চোরা দৃষ্টি নিক্ষেপ করা অথবা দৃষ্টির কোন বিশ্বাসঘাতকতামূলক আচরণ।’ (তাফসীরে বায়যাবী, ২/২৬৫)।

ইবাদতের স্বাদ পেতে হলে…

বর্তমানে চোখের হেফাজত না করা একটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোখের গুনাহকে গুনাহ মনে হয় না। অবাধে এদিক-সেদিক তাকিয়ে চোখের জিনায় লিপ্ত হচ্ছি আমরা।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয়ই চোখের জিনা হচ্ছে দৃষ্টিপাত করা’। (মুসলিম, হাদিস,৬৬৪৭)।

বর্তমানে ফেইসবুক, ইউটিউব ও অনলাইন-অফলাইন- সব জায়গায় হারাম কন্টেন্ট ভয়ংকর আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ইসলামে স্পষ্টভাবে হারাম বলা হয়েছে- এমন জিনিসগুলোকে একেবারে হালকা করে দেখা হচ্ছে। কিন্তু এসব অনিয়ন্ত্রিত দৃষ্টিপাতের কারণেই নামাজ ও অন্যন্য ইবাদতের স্বাদ পাওয়া যায় না। ইবাদত করা বোঝা মনে হয়। (নাউজুবিল্লাহ)

কিন্তু মনে রাখতে হবে রবের সান্নিধ্য লাভ করতে হলে এবং ইবাদতের স্বাদ পেতে হলে দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আল্লাহ তায়া বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই কান, চোখ ও অন্তর এসবের ব্যাপারে হাশরের মাঠে জিজ্ঞাসা করা হবে’। ( সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত, ৩৬)।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com