সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে মহাসমাবেশে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে এসেছেন বিএনপির নেতকর্মীরা। হাজারো নেতাকর্মী রাত্রিযাপন করছেন নয়াপল্টন এলাকাজুড়ে। পুলিশি তল্লাশি ও গ্রেপ্তারে আতঙ্কে হোটেল বা আত্মীয়দের বাসায় না থেকে কেউ রাস্তায়, কেউ ফুটপাতে আবার কেউবা ভ্যানে এবং আশপাশের অফিসের গেটে রাত্রিযাপন করছেন।
বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে লঞ্চে রাত ১টায় ঢাকায় আসেন ৭৮ বছর বয়সী চাঁদপুরের মোড়ল বেপারী। সেখান থেকে সরাসরি চলে আসেন নয়াপল্টনে। রাতে খিচুড়ি খেয়ে বিএনপির অফিসের বিপরীত পাশের ফুটপাতে পোস্টার বিছিয়ে হাতে মাথা রেখেই কেটে যায় তার একটি রাত। দলকে ভালোবেসে আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে আন্দোলনের শরিক হতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত তিনি। শুধু মোড়ল বেপারী নন, বিএনপির শতশত নেতাকর্মী গতকাল রাতে রাস্তায় ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন।
সুদূর বান্দরবান থেকে ঢাকায় এসেছেন চার যুবক। পুলিশি হয়রানির ভয়ে আবাসিক হোটেলে উঠেননি তারা। সোজা চলে এসেছেন নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে রাত ১২টার দিকে কার্যালয় সংলগ্ন ভিক্টরি হোটেলের সামনে ফুটপাতে কাগজ বিছিয়ে শুয়ে পড়েন।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হাবিবুর রহমান। তিনি রাত কাটিয়েছেন নয়াপল্টনের ফুটপাতে। তিনি বলেন, রাতে গুলিস্তান থেকে খেয়ে এসে রাস্তায় ঘুমিয়েছি। আমার মতো হাজারো নেতাকর্মী এখানে রাত কাটিয়েছেন। কোন কষ্টই কষ্ট মনে করছি না। আমরা শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই। খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই।
সমাবেশে যোগ দিতে শুক্রবার বিকালে ঢাকায় এসেছেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা রাজিয়া সুলতানা। হোটেল কিংবা স্বজনদের বাসা বাড়িতে না উঠে সোজা চলে এসেছেন নয়াপল্টনে। রাতেও এখানে থাকছেন তিনি। বাগেরহাটের খানজাহান আলী থেকে এসেছেন থানা সভানেত্রী মেহেরুন। তিনিও রাতে নয়াপল্টনেই থাকছেন। এছাড়াও দূর দুরান্ত থেকে এসেছেন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। অনেকেই হাতের ব্যাগকে মাথার বালিশ বানিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েছেন।
উল্লেখ্য, গতকাল রাতে ২০ শর্তে বিএনপিকে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুমতি দেয় ডিএমপি।