অন্য ভাষায় :
শনিবার, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :

জবানের হিফাজত

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৮৯ বার পঠিত

ধনুকের তীর আর মুখের কথা একবার বেরিয়ে গেলে তা আর ফিরানো যায় না। বর্ষার ফলার আঘাতে উপশম হয়। তবে জবানের আঘাতের কোনো উপশম নেই। তরবারির আঘাতের মলম ও প্রতিষেধক আছে। কিন্তু জবানের আঘাতের প্রতিষেধক নেই।

জবান আল্লাহর দেয়া অপার রহমত। যিনি তাঁর বান্দাদের অনুগ্রহ করে এই নিয়ামত দিয়েছেন। যাতে তারা সুন্দরভাবে তাদের জীবন পরিচালনা করতে পারে। এতে তাদের কোনো বেক পেতে না হয়। কথা বলার সহজ সরল এক মাধ্যম হলো জবান। জবান খুব ধারালো অস্ত্র। যা দিয়ে কঠিন সব বিষয়গুলোকে মুহূর্তের মধ্যে চিবিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলা যায়। তবে জবান ধনুকের তীরের মতো। যা একবার ধনুক থেকে বের হলে আর আসে না ফিরে। তদ্রƒপ কথা যা জবান থেকে একবার বেরিয়ে গেলে আর তাকে আপন জায়গায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

এ জন্য খুব বুঝেশুনে আমাদের কথা বলা উচিত। যেমনিভাবে তীর চালনা শিখতে হয়, তদ্রƒপ শরিয়ত বর্ণিত জবান পরিচালনা করাও শিখতে হয়। অন্যথায়, আখিরাতের সমস্যার সাথে দুনিয়ার বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হবে। জবান এমন এক বাহন যা থেকে নির্গত একটি কথার মাধ্যমে জেলহাজত পর্যন্ত হতে পারে। আবার একটিমাত্র কথার কারণে ফাঁসির রায়-ও হয়ে যেতে পারে। এ জন্য জবান হিফাজতের কোনো বিকল্প নেই। জবান দিয়ে অনেক বেশি কথা বলে জ্ঞানী সাজা যায় না। বরং খুব কম কথা বলেই জ্ঞানী হওয়া যায়।
জবান হিফাজতে ইসলামের অনেক দিকনির্দেশনা রয়েছে। জবান বিষয়ে কেয়ামত দিবসে আল্লাহর কাছে জিজ্ঞাসিত হতে হবে। (সূরা বনি ইসরাঈল-৩৬)

জবানের এক স্বভাবগত অভ্যাস হলো, বেশি বেশি আওড়ানো। কথা বলতে পারলেই ও শান্তি পায়। তাই তো আমরা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে এমন অনুভূতি অনুভব করি যে, যখন আর কথা না বলে থাকতেই পারি না। অন্য কারো কাছে মনের কথাগুলো খুলে না বললে যেন ভালোই লাগে না। নিজের কাছে বিরক্তি ও অস্বস্তিবোধ হতে থাকে। মনের মধ্যে স্বস্তি ফিরে পাই না। এ অবস্থা মানুষ হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের হয়ে থাকে। তবে আমরা যারা এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারি- তারাই প্রকৃত সফল। যে সফলতার সুফলতা কেবল দুনিয়াতে নয়; বরং আখিরাত দিবসেও থাকবে বহমান। হাদিসে নববীতে আল্লাহর রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের জবান হিফাজতের জিম্মাদারি গ্রহণ করবে, আমি তার জান্নাতে যাওয়ার জিম্মাদারি গ্রহণ করব।’ (বুখারি)

এই জবান দিয়ে বিভিন্ন প্রকারের গুনাহ সংঘটিত হয়। যা সমাজের মধ্যে এক অস্থিরতার সৃষ্টি করে। মানুষের পরস্পরের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি, দাঙ্গা-হাঙ্গামার জন্ম দেয়। তাই নবী করিম সা: বলেন, ‘যার জবান ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকবে, সেই প্রকৃত মুসলমান।’ (মুসলিম) মুসলমান হওয়ার মানদণ্ড হিসেবে নবী সা: জবান হিফাজতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে উল্লেখ করেছেন। কারণ, মানুষ জবান দিয়ে সবচেয়ে বেশি গুনাহ করে ফেলে। যা নিজেরাও বুঝতে পারে না। কারণ, জবান দিয়ে সংঘটিত গুনাহকে অনেকে গুনাহ-ই মনে করে না; বরং সেটি তারা বোধ ভেবে করে থাকে। তাই তারা তাওবার প্রয়োজন-ই অনুভব করে না। কুরআনুল কারিমে জবান দিয়ে সংঘটিত অপরাধ গিবতকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে। (সূরা হুজরাত-১৩ ) সুতরাং আসুন জবানকে হিফাজত করি। গুনাহমুক্ত জীবন গড়ি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com