ইতিহাসে রাজাকারদের একটি স্বীকৃত পরিচয় রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে শেখ হাসিনার একনায়কতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকেই ‘রাজাকার’ বলে তকমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাজাকার আর স্বৈরাচার যেন একাকার হয়ে গেছে।’ এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন অডিটোরিয়ামে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নিহত জুলাই শহীদ ও অন্যান্য শহীদদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ এই ১৫ বছরে দেশে ফ্যাসিবাদের থাবায় বহু নিরীহ মানুষ জীবন দিয়েছে। ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুদিন। তাই আমরা তার এবং মুগ্ধসহ অন্য শহীদদের স্মরণে এই দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে বেছে নিয়েছি।’জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘১৯৭১ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, তখন তাঁর নেতৃত্বে যারা মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলেন, তাদের নিশ্চিহ্ন করতেই রাজাকার-আলবদর বাহিনী গঠন করা হয়েছিল। যারা লক্ষ লক্ষ নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করতে পারে, তারা জিয়াউর রহমানকে পেলে তাকেও হত্যা করত এটাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। অথচ আজ সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষকের অনুসারীদেরকেই ‘রাজাকার’ বলার অপচেষ্টা চলছে, যা ইতিহাসের বিকৃতি ছাড়া কিছুই নয়।’
স্মরণসভায় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় এবং স্মরণসভা শেষে একই স্থানে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির যৌথ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লবের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য রাখেন বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহিদুল্লাহ, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান খান মুকুল, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জহির সাজ্জাদ হান্নান সহ অন্যান্যরা।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে গৌরনদী পৌর যুবদল নেতা নুর উদ্দিন বুদ্ধি বলেন, জুলাই শহীদরা ছিলেন ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিরোধের প্রতীক। তারা রাজপথে জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন গণতন্ত্র দমন করা গেলেও জনগণের অধিকার কখনও নিঃশেষ করা যায় না। আমরা আজ তাঁদের রক্তাক্ত পথের উত্তরসূরি। এই আত্মত্যাগ শুধু স্মরণ করার নয় বরং তা আমাদের জন্য স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর একটি আহ্বান।