শনিবার, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, ১৭ মে ২০২৫, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

গাজায় সব খাবার শেষ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২২ বার পঠিত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় খাদ্য মজুদ শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।গতকাল শুক্রবার সংস্থাটি জানায়, ২০ লাখেরও বেশি মানুষের বাসস্থান গাজা উপত্যকায় সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সমস্ত মানবিক সাহায্যের প্রবেশে ইসরাইলের বাধা দিয়ে রেখেছে। এখন আর এখানে কোনো খাদ্য মজুদ নেই।

ডব্লিউএফপি ঘোষণা করেছে, তারা তাদের অবশিষ্ট সরবরাহ রান্নাঘরে পৌঁছে দিয়েছে যেখানে গরম খাবার তৈরি করা হচ্ছে, যা কয়েক দিনের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। জাতিসংঘের সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়েছে, জরুরি ব্যবস্থা না নিলে পরিবারগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা বন্ধ করতে বাধ্য হতে পারে।

ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি আবারো এক ভাঙন পর্যায়ে পৌঁছেছে। মানুষ পরিস্থিতি মোকাবেলা করার উপায় হারিয়ে ফেলছে এবং সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির সময় অর্জিত ভঙ্গুর সাফল্যগুলো অদৃশ্য হয়ে গেছে ।’

গাজায় কয়েক সপ্তাহ ধরে খাদ্য সহায়তার একমাত্র ধারাবাহিক উৎস ছিল রান্নাঘর, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবনরেখার প্রতিনিধিত্ব করে, যদিও তারা তাদের দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদার মাত্র এক-চতুর্থাংশ জনসংখ্যার কাছে পৌঁছে দিয়েছিল ।

ডব্লিউএফপি ২৫টি বেকারিকেও সহায়তা করেছিল, যেগুলো ৩১ মার্চ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কারণ, গমের আটা এবং রান্নার জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া, পরিবারগুলোতে বিতরণ করা খাদ্য প্যাকেজ -যার মধ্যে দুই সপ্তাহের রেশন ছিল সেই সপ্তাহেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।

সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজায় কোনো মানবিক বা বাণিজ্যিক সরবরাহ প্রবেশ করেনি। কারণ, সব প্রধান সীমান্ত পয়েন্ট বন্ধ রয়েছে।

জাতিসংঘের সংস্থা এবং মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বারবার মানবিক সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন। ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, গাজায় এই বন্ধের ঘটনাটি সবচেয়ে দীর্ঘতম এবং এটি ইতোমধ্যেই ভঙ্গুর বাজার এবং খাদ্য ব্যবস্থাকে আরও খারাপ করে তুলছে।

বছরের শুরুতে যুদ্ধবিরতি সময়ের তুলনায় খাদ্যের দাম ১,৪০০ শতাংশ আকাশচুম্বী হয়েছে। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। এটি অপুষ্টির বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে বিশেষ করে ছোট শিশু, গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী নারী, বয়স্ক ব্যক্তি এবং অন্যান্য দুর্বল ব্যক্তিদের জন্য।

ইতোমধ্যে ১ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি খাদ্য সহায়তা যা চার মাস পর্যন্ত দশ লক্ষ মানুষকে খাওয়ানোর জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত আছে। সীমান্ত পুনরায় খোলার সাথে সাথে ডব্লিউএফপি এবং অংশীদারদের দ্বারা গাজায় আনার জন্য অপেক্ষা করছে।

সংস্থাটি বলেছে, ‘ডব্লিউএফপি সকল পক্ষকে বেসামরিক নাগরিকদের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং অবিলম্বে গাজায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।’

সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলি আক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ছে।শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস গাজা এবং পশ্চিম তীর উভয়েরই অবনতিশীল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ১৮ মাসে গাজার ২২ লাখ ফিলিস্তিনির জীবন যুদ্ধবিগ্রহ, মানবিক সহায়তার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ এবং প্রায় সকল প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বিশেষ করে গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি আক্রমণ ত্বরান্বিত হয়েছে। যার ফলে অসংখ্য বেসামরিক লোকের প্রাণহানি ঘটেছে এবং অবশিষ্ট অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে ।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘খাদ্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণের অভাবের কারণে সাধারণ মানুষ ক্রমশ মরিয়া হয়ে উঠছে, সামাজিক অস্থিরতা আরও গভীর হচ্ছে, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধের ঘন ঘন খবর পাওয়া যাচ্ছে। গাজার বেসামরিক নাগরিকদের বেঁচে থাকার জন্কঠোর বিধিনিষেধ এবং প্রায় সকল প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com