রাজধানীর পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতির পৃথক দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন ও সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য তন্ময় দাস, (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ), সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সদস্য (উন্নয়ন) মেজর(অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য শফি উল হক।
মামলা দুটিতে দাখিল হওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
চার্জশিট হওয়া একটি মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে গৃহায়ন ও রাজউকের কর্মকর্তাসহ মোট আসামি ১২ জন। আর অপর মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে তার মা শেখ হাসিনা এবং গৃহায়ন ও রাজউকের কর্মকর্তাসহ মোট ১৭ জন আসামি।
দুদকের আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, এদিন আদালত পরোয়ানা জারির পর আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কিনা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য ২৮ এপ্রিল তারিখ ধার্য করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ মালিকানায় ও তার ছেলে, মেয়ে, বোন, বোনের মেয়ে ও বোনের ছেলের নামে ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও তা হলফনামায় গোপন করেন এবং পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পের বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন-বিধি ও নীতিমালা ও আইনানুগ পদ্ধতি লঙ্ঘন করেছেন।
তার দপ্তরসহ প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) গণকর্মচারীদের প্রভাবিত করে নিজে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্বরত ও বহাল থাকা অবস্থায় নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের অতি মূল্যবান কূটনৈতিক এলাকায় ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ৯ নম্বর প্লট নিজ নামে বাস্তব দখলসহ রেজিস্ট্রিমূলে গ্রহণ করে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় দণ্ডযোগ্য অপরাধ করেছেন আসামিরা।
উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন একই আদালত।
এরপর গত ১৩ এপ্রিল একই আদালত ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউক থেকে ৩০ কাঠা প্লট গ্রহণের পৃথক তিন মামলায় শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিকসহ ৫৩ বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।