বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত সময় পাবে। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে কোনো একসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে গতকাল মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া : ক্লাইমেট পলিসি অ্যান্ড দ্য গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন’ শীর্ষক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এ সংলাপের আয়োজন করে।
সংলাপে সঞ্চালক সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে নতুন নতুন সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণের প্রস্তাব দেন। এ সময় রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেন, সরকারের কাজ এমন পর্যায়ে বাড়ানো উচিত হবে না, যেন জুনের পর সরকারের মেয়াদ বাড়ানো লাগে।
পরে সাংবাদিকরা জানতে চান, এই জুন বলতে তিনি কি বুঝিয়েছেন। এর উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অনেক আগেই বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। আমি সেই বক্তব্যকেই পুনর্ব্যক্ত করেছি। আর সেই বিবেচনায় বলেছি, অন্তর্বর্তী সরকার যেসব কার্যক্রম হাতে নেবে, সেগুলো জুনের মধ্যে শেষ করবে।’
এ সময় জলবায়ু অর্থায়নের বিষয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি প্রশমনে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে যেসব অর্থায়ন করা হয়, সেখান থেকে অর্থ সংগ্রহের প্রক্রিয়া খুবই জটিল। তাই বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য অর্থছাড়ের প্রক্রিয়া সহজীকরণ করতে হবে। এ ছাড়া দ্বিপক্ষীয় উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে হবে।
পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে শুধু অভিযান চালিয়ে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। অভিযান চালিয়ে এরই মধ্যে সুপার শপে পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। সামগ্রিকভাবে পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করতে হলে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যকার সময়ে পলিথিনের ব্যবহার অনেকটা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে এসেছিল। সে সময় অনেক বিকল্পও দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে সরকারের উদাসীনতায় পলিথিনের ব্যবহার ফের বেড়ে গেছে। এ সময় উপদেষ্টা জানান, বুড়িগঙ্গা নদীর তলদেশে পাঁচ ফুট পলিথিনের স্তর জমা পড়েছে। এটি তোলার জন্য যে যন্ত্রপাতি দরকার, সেটি অনেক ব্যয়বহুল। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থের সীমাবদ্ধতা থাকায় সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।