বুধবার, ০৫:০৯ অপরাহ্ন, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

বিএনপির ৬৩টি খালি আসনে প্রার্থী কারা?

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৬ বার পঠিত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৩৭টিতে নিজেদের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে এখনো ৬৩টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর এসব ‘খালি’ আসনে কারা মনোনয়ন পেতে পারেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা চলছে। দলটির একাধিক সূত্র বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে, ওই আসনগুলোর বড় অংশ মিত্র দলগুলোর জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।

প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে ছিলেন, যেসব আসনে তারা আগ্রহী, সেসব আসনে আমরা প্রার্থী দিইনি। তারা তাদের নাম ঘোষণা করলে আমরা চূড়ান্ত করব। তবে ফাঁকা আসনগুলোতে সবাই যে জোটের প্রার্থী হবেন, তা নিশ্চিত নয়। তবু কিছু আসনে শরীক দলের প্রার্থীরা বিএনপির ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়ে ইতোমধ্যে মাঠে প্রচারণাও শুরু করেছেন। এর অন্যতম উদাহরণ ঢাকা-১৩ আসন-যেখানে সমমনা দল এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ দাবি করেছেন, তিনি বিএনপির মৌখিক সবুজ সংকেত পেয়েছেন এবং নির্বাচনী প্রচারণাও চালাচ্ছেন।

তবে বিএনপি যেসব আসন ফাঁকা রেখেছে, সেগুলোর সব শরীক দলের জন্য রাখা হয়েছে কি না-এ নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। যেমন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চললেও, যে সব আসনে এনসিপির নেতারা নির্বাচন করতে আগ্রহী, সেসব আসনে বিএনপি ইতোমধ্যে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে।

২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর বাকি ৬৩টি আসনে কারা দলীয় মনোনয়ন পাবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা আরও জোরালো হয়েছে। বিএনপি মহাসচিবও ইঙ্গিত দিয়েছেন-এসব আসনের অনেকগুলোই জোট ও সমমনা দলগুলোর জন্য রাখা হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বামধারার ছয়দলীয় জোট-গণতন্ত্র মঞ্চের কয়েকটি দলও বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে তাদের নেতারা জানিয়েছেন।

ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকার মোট ১৫টি আসনের মধ্যে নয়টিতে প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি, আর ফাঁকা রেখেছে ছয়টি। এর মধ্যে ঢাকা-১৩ ও ঢাকা-১৭ বেশি আলোচনায়। ববি হাজ্জাজ জানিয়েছেন, জোট ঘোষণার পর প্রার্থিতাও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হবে। এদিকে গুলশান-বনানী এলাকায় গরুর গাড়ি মার্কা নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপির শরীক বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আন্দালিব রহমান পার্থ।

ঢাকার বাইরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি জানিয়েছেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নির্বাচন করবো, এটি এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত। যদিও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের প্রতিবাদ মিছিলের মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে।

এছাড়া চট্টগ্রাম-১৪ আসনে এলডিপি সভাপতি অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক, বগুড়া-২-এ নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, পিরোজপুর-১-এ জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, লক্ষ্মীপুর-১-এ এলডিপির চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন সেলিম, কিশোরগঞ্জ-৫-এ বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা এবং ঝালকাঠি-১-এ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বিএনপির সমর্থন পেতে পারেন বলে জানা গেছে। এসব আসনেও বিএনপি এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি।

বিএনপি ও শরীক দলগুলোর নেতারা জানাচ্ছেন-যেসব আসনে প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, তার বেশির ভাগই মূলত জোটের জন্য ‘ফাঁকা’ রাখা হয়েছে।

গণঅধিকার পরিষদও ২০২২ সাল থেকে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত ছিল। দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর পটুয়াখালী-৩ আসনে এবং সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ঝিনাইদহ-২ আসনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপি এসব আসনে এখনো কাউকে মনোনয়ন দেয়নি। তবে জোট হবে কি না-সেটি এখনো অনিশ্চিত। রাশেদ খান জানান, প্রাথমিক আলোচনা হলেও আসন নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ঢাকা-৭ আসনও আলোচনায়। খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক আগে থেকেই এখানে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এবার বিএনপির ‘ফাঁকা’ রাখা আসনের তালিকায় এই আসনটিও আছে। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত বিএনপির জোটে থাকবেন, নাকি অন্য জোটে যাবেন-তা পরিষ্কার নয়।

একইভাবে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক হলেও ওই আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে। তিনি বিকল্প হিসেবে ঢাকা-১২ আসন বিবেচনার কথা বলেছেন, যদিও সে আসনেও বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন-কিছু আসনে দলীয় সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কৌশলগত বা স্থানীয় বিবেচনায় পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের দল এনসিপি নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াত-দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা চালাচ্ছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (ঢাকা-১১), আখতার হোসেন (রংপুর-৪), হাসনাত আবদুল্লাহ (কুমিল্লা-৪), সারজিস আলম (পঞ্চগড়-১), আবদুল হান্নান মাসউদ (নোয়াখালী-৬) ও আরিফুল ইসলাম আদীব (ঢাকা-১৪) প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিলেও, এসব আসনে ইতোমধ্যে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ফলে এনসিপি এখনো সিদ্ধান্তহীন।

বিএনপি প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর সোমবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, যারা বিএনপির মনোনয়ন পাননি, তারা যদি এনসিপিতে যোগ দেন-আমরা তাদের স্বাগত জানাব। তবে সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানান, বিএনপির সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com