মাদারীপুরের কালকিনিতে ৮ বছরের এক শিশুকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের পর রক্তক্ষরণ শুরু হলে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেলে শিশুটিকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান।
পরিবারের বরাতে পুলিশ জানায়, সোহাগ শিকদার নামে এক ব্যক্তি শুক্রবার শিশুটিকে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করে। তিন ঘণ্টা পর শিশুটির জ্ঞান ফেরে। তখন বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য শিশুটিকে হুমকি দেওয়া হয়। বাড়ি এসে ঘটনাটি শিশু তার মাকে জানায়।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার পশ্চিম পাঙ্গাশিয়া গ্রামের আক্কেল শিকদারের ছেলে সোহাগ শিকদার (৪০) নিজঘরে ডেকে নেন প্রতিবেশী শিশুটিকে। পরে শিশুটির নাকের সামনে চেতনানাশক দিয়ে অজ্ঞান করে ধর্ষণ করেন। শিশুটির জ্ঞান ফিরলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তিনি। এসময় বিষয়টি কাউকে জানালে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন সোহাগ।
বাড়িতে এসে প্রচণ্ড ব্যথা ও রক্তক্ষরণ শুরু হলে শিশুটি তার মাকে সব জানায়। কিন্তু শিশুটির পরিবারকেও সোহাগ হত্যার হুমকি দেয়। তাই প্রথমে শিশুটির পরিবার ভয়ে কাউকে কিছু জানায়নি। রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে রোববার শিশুটিকে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে বিকেলে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিশুটির মা বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ করতে চাই না। তাহলে সোহাগ ও তার লোকজন আমাদের মেরে ফেলবে। খুব ভয়ে আছি। এই ঘটনার বিচার পাবো কি না সেটাও জানি না।
মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সিহাব চৌধুরী বলেন, ‘শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও দেওয়া হয়েছে। গাইনি চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিকেল টিম গঠন করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুইদিন আগের ঘটনা। বিষয়টি জানাজানির পর হাসপাতালে যায় পুলিশ। পরে মেয়েটির সঙ্গে কথা বললে ঘটনার প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া যায়। এই ঘটনায় অবশ্যই মামলা হবে। আর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারও করা হবে। যদি নির্যাতিতার পরিবারকে কেউ হুমকি দেয়, তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
কালকিনি থানার ওসি কে এম সোহেল রানা বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।