সোমবার, ১১:০৫ অপরাহ্ন, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৪ বার পঠিত

দ্রুত দেশে ফিরে আসতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ‘ঐক্যের প্রতীক’ হিসেবে বিবেচিত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এমনটাই চিন্তা করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে লন্ডন ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন তিনি। তার শারীফরক অবস্থা নিয়ে চিকিৎসকরাও একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। লিভার ট্রান্সপ্লান্টের বিষয়ে এতদিন যে আলোচনা হচ্ছিল, সেটি আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। তবে লিভার-কিডনিসহ শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে চিকিৎসকরা ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন।

বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা জানিয়েছেন, বেগম জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়ে লন্ডনে আলোচনা চলছে। কবে নাগাদ ফিরতে পারেন সেটি ঠিক না হলেও সপ্তাহখানেক পরে তিনি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
বেগম জিয়া হাসপাতাল থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠার পরেও তার সাথে যাওয়া মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরাসহ অন্যরাও সেখানে অবস্থান করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এক সাথেই তারা দেশে ফিরবেন। কাতারের আমিরের দেয়া বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে দোহা হয়ে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। জানা গেছে, আমিরের পাঠানো অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি লন্ডন থেকে ঢাকা ফিরতে পারেন।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানিয়েছেন, স্বৈরাচারের বিদায়ের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কেটে যায়নি। আন্দোলনে থাকা বিভিন্ন পক্ষের মধ্যেও কিছুটা অনৈক্যের সুর ফুটে উঠেছে। এই অবস্থায় বেগম জিয়াই রাজনীতির মাঠে ঐক্যের প্রতীক। এখনো তার যে কোনো বার্তা সব পক্ষই সাদরে গ্রহণ করে। যে কারণে প্রকাশ্যে রাজনীতিতে অংশ না নিলেও দেশে তার উপস্থিতি সব সময়ই তাৎপর্যপূর্ণ।

গত ৮ জানুয়ারি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর আগের দিন কাতারের আমিরের পাঠানো রাজকীয় বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা থেকে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন তিনি। সেখান থেকে সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৭ দিন চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে ছেলের বাসায় উঠেছেন তিনি। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় লন্ডন ক্লিনিক থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে বাসায় নিয়ে যান তারেক রহমান।

বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘লন্ডন ক্লিনিক ম্যাডামকে ছুটি দিয়েছে। এখন উনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় উঠেছেন।’
তিনি জানান, ‘আপাতত বাসায়ই বেগম জিয়া লন্ডন ক্লিনিকের অধ্যাপক জন প্যাট্টিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন থাকবেন। আমরা যারা ম্যাডামের চিকিৎসক আছি তারাও এ কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকব। ইউকের যে নিয়ম আছে সেই নিয়ম মেনেই বাসায় উনার চিকিৎসা চলবে। সেই ভাবে বাসায় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

জাহিদ জানান, ‘জন প্যাট্টিক কেনেডিসহ সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিংন্স হসপিটালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিএনপি চেয়ারপারসনের সব রিপোর্ট পর্যালোচনা করেই তাকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। তবে শর্ত রয়েছে যে, তিনি লন্ডন ক্লিনিকের জন প্যাট্টিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন থাকবেন।’

এ দিকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি বলে লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি। লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা লিভার সার্জারি এলাউ করেননি।’

তিনি বলেন, ম্যাডামের হার্টের সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন সমস্যা মূলত কিডনিতে। এভার কেয়ার হাসপাতালে যে চিকিৎসা ছিল তা লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা প্রথমে সাপোর্ট করেননি। তার পর নতুনভাবে কিডনির চিকিৎসা শুরু হয়। কয়েক দিন আগে ক্রিয়েটিনিন মাত্রা (কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে) বর্ডার লাইন ক্রস করে। এতে অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। এর পর আরো নতুন কিছু চিকিৎসার ফলে এখন অনেকটা ভালো।

কবে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া, এই প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক জানান, ‘বলা যায় মূল চিকিৎসা শেষ। এখন ফলোআপ করতে হবে। কবে দেশে ফিরবেন এটা ম্যাডামের ওপর নির্ভর করছে।’

শুক্রবার লন্ডনের স্থানীয় সময় রাত ৯টার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে তারেক রহমানের গাড়িতে উঠেন খালেদা জিয়া। এর পর তারেক নিজেই ড্রাইভিং সিটে বসেন। গাড়ির সামনের সিটে ছিলেন পুত্রবধূ ডা: জুবাইদা রহমান। বাসায় পৌঁছলে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান তারেকের মেয়ে জাইমা রহমান, মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান, জাহিয়া রহমান এবং তাদের মা সৈয়দ শামিলা রহমান।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com