চলতি বছরে বিনোদনের সবচেয়ে আলোচিত খবর- ‘বিয়ে করেছেন পূর্ণিমা’ আর ‘তানিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ, বিয়ে করেছেন টুটুল’। এই দুটি ঘটনা যে ঘটবে সেটা সাধারণ মানুষের চিন্তার বাইরে ছিল। যদিও তারকাদের বিয়ে টেকে না এমন একটা ভাবনা সবার মধ্যেই আছে। তারপরও সংগীতশিল্পী এসআই টুটুলের সঙ্গে তানিয়ার ২৩ বছরের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হবে কেউ ভাবতেই পারেননি। সেই ভাবনা শেষ না হতেই প্রকাশ্য এলো পূর্ণিমার দ্বিতীয় বিয়ের খবর। ১৫ বছর পূর্বে পূর্ণিমা যে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, সেটাও যে নেই ভক্তরা এটাও মানতে পারছেন না। এই দুই বিচ্ছেদের খবর কখনো গণমাধ্যমেও আসেনি।
২০০৭ সালে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আহমেদ ফাহাদ জামাল ভালোবেসে বিয়ে করেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমাকে। বিয়ের পরে পূর্ণিমা চলচ্চিত্রে অনেকটাই অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ২০১৪ সালে তার কোলজুড়ে আসে কন্যাসন্তান আরশিয়া উমাইজা। গত কয়েক বছর ধরে আলাদা থাকছিলেন তারা। এই খবর গণমাধ্যমে আসার আগেই গেল বৃহস্পতিবার রাতে নতুন বিয়ের খবর জানান এই নায়িকা। জানান ২ মাস আগেই আকিজ গ্রুপের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আশফাকুর রহমান রবিনকে বিয়ে করেছেন তিনি। পূর্ণিমা বলেন, ‘বিয়ে করেছি এটা সত্যি। মাসখানেক আগে পারিবারিকভাবে বিয়েটা হয়েছে।’ আশফাকুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘চার কি পাঁচ বছর আগে কাজের সূত্রেই তার সঙ্গে পরিচয়। সেখান থেকেই একটা ভালো বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব হয়েছে। এরপর পরিবারকে জানাই। দুই পরিবার থেকে বলা হলো, বিয়েটা করে ফেললেই ভালো। পারিবারিকভাবে ছোটখাটো আয়োজনে বাসাতেই বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে।’ বিয়েতে দুই পরিবারের সবাই অনেক খুশি জানিয়ে পূর্ণিমা আরও বলেন, ‘দুই পরিবারের ইচ্ছাতেই তো বিয়েটা হলো, সবাই খুশি। আমার মেয়েসহ সবাইকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন গ্রহণ করে নিয়েছেন, খুবই আদর করছেন। আমার মাও সবাইকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করে নিয়েছেন।’ এ অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘মাঝখানে পরিবারের সবাই অসুস্থ ছিলাম। প্রত্যেকের জ্বর ছিল। বিয়ের অনুষ্ঠানের পরপরই বাসার সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে।’
বিয়ের পর পূর্ণিমাকে শুভকামনা জানিয়েছেন তার প্রাক্তন স্বামী আহমেদ ফাহাদ জামাল। তিনি বলেন, ‘পূর্ণিমার বিয়ের খবর গণমাধ্যমের বরাতে আমিও জেনেছি। তাদের জন্য শুভ কামনা থাকল। আর আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন সবাই।’ ফাহাদ আরও বলেন, ‘তিন বছর আগেই বিচ্ছেদ হয়েছে আমাদের। আমাদের একমাত্র সন্তান উভয়ের কাছেই থাকে।’ বিয়ের পর অনেকেই তার কাছে অনেক কিছু জানার জন্য ফোন করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দয়া করে আমাকে ফোন করা ও মেসেজ দেওয়া বন্ধ করুন। যা হয়েছে খুবই ভালো। মানুষের জীবনেই এটা হয়। ওরা ভালো থাকুক। আর আমি পুরো বিষয়টা জানি।’
সংগীতশিল্পী এসআই টুটুল ও অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ ১৯৯৯ সালের ১৯ জুলাই ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ৫ বছর আলাদা থাকার পর গেল বছর এই তারকা দম্পতির বিচ্ছেদ ঘটে। বিষয়টি এতদিন গোপন ছিল। প্রকাশ্যে আসে সম্প্রতি টুটুল নতুন করে বিয়ে করার খবরের মাধ্যমে। পাত্রী যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। নাম শারমিন সিরাজ। টুটুলের বিশ্বস্ত একজন জানিয়েছেন, বহু বছর যাবৎ প্রথম স্ত্রী তানিয়া আহমেদের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। তারা আলাদা ছিলেন। পরে এসআই টুটুল বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যেই টুটুলের সঙ্গে শারমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রেই তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, গেল বছর ডিসেম্বরে এসআই টুটুল তানিয়াকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান। বিচ্ছেদের আট মাস পরে বিয়ে করেছেন টুটুল। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘তানিয়ার সঙ্গে আমি পাঁচ বছর সেপারেট ছিলাম। গত বছর আমাদের অফিশিয়াল ডিভোর্স হয়। দেশের বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভির ‘বাংলা গায়েন’ থেকেই শারমিনের সঙ্গে পরিচয়। আমরা দুজনই সিঙ্গল ছিলাম।’ শারমিন উপস্থাপক হিসেবে পরিচিত। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন। দেশে পরিচয় হলেও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। শিগগির যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
টুটুলের নতুন সংসারকে শুভকামনা জানিয়েছেন তানিয়া। তিনি যাতে ভালো থাকেন সেই কামনাও করেছেন এই অভিনেত্রী। তানিয়া আহমেদ বলেন, ‘বিয়ের খবরটি আমিও শুনেছি। ওরা ভালো থাকুক। তার জন্য শুভ কামনা রইল। সে যদি ভালো থাকে তা হলে আমার সন্তানরাও ভালো থাকবে। সুতরাং তার ভালো থাকাটা আমার জন্য জরুরি। তার জন্য দোয়া রইল।’ বিচ্ছেদের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সে গানের মানুষ। তার জীবনধারণটা একটু অন্যরকম। সে জায়গাটায় হয়তো আমাদের দূরত্ব হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা এটা আমাদের দুজনের একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। এখানে তো আর বলার কিছু নাই।’