২০১৯ সালের ২৬ জুন। বরগুনা শহরের কলেজ রোডে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে। ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে তিন বছর। ছেলে হারানোর শোকে আজও থামেনি আবদুল হালিম দুলাল শরীফের আর্তনাদ।
অন্যদিকে বুকের মানিক হারিয়ে কবরের পাশে গিয়ে এখনো আহাজারি করছেন মা ডেইজি বেগম। স্বজনসহ বরগুনাবাসীর দাবি একটাই উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি শেষ করে রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়।
সোমবার রিফাত শরীফের কবরের পাশে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা ডেইজি বেগম বলেন, বাবারা ছেলেকে ছাড়া আমি আর থাকতে পারি না। আমি চাই উচ্চ আদালতের আপিলের শুনানি শেষে রায় বাস্তবায়ন হোক।
নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, রিফাত আমার একমাত্র ছেলে ছিল। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার ছিল আমার। মিন্নির কারণে সেই সুখের সংসার ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ছেলে হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যকর হলে হয়তো কিছুটা সান্ত্বনা পাব। এ মামলার দ্রুত বিচার শেষে রায় বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, এ মামলার আপিল উচ্চ আদালতে এখন পর্যন্ত শুনানি হয়নি। সকল আপিলই শুনানির জন্য আছেন। কিন্তু পাঁচজন অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি হওয়ায় তারা জামিনে আছেন। যে ছয় জনের দশবছর করে সাজা হয়েছিল তাদের এখন পর্যন্ত জামিন হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয় আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ওই বছরের ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন জেলা শিশু আদালত। রায়ের পর দণ্ডিত সব আসামি উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। এখন সেই আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়াও এ মামলায় দণ্ডিত ১৭ আসামির মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ৫ জন জামিনে রয়েছেন।
এ মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয়, মোঃ হাসান ও স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।